পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাদ্রিসাহেবের সহিত বিচার G টাইটলর সাহেবের সহিত তৰ্ক-যুদ্ধ এই সময়ে, অর্থাৎ ১৮২৩ খ্ৰীষ্টাব্দে একটি অতি আমোদজনক তর্ক-যুদ্ধ উপস্থিত হয় । এই যুদ্ধেব এদিকে হিন্দুকলেজ ও মেডিকেল স্কুলের অধ্যক্ষ ডাক্তার টাইটলীর সাহেবের ভ্রাতা ( হিন্দু কলেজের জনৈক শিক্ষক ) ও শ্ৰীরামপুরের মিসনরিগণ, এবং অপরদিকে রামমোহন রায় । সুপ্ৰসিদ্ধ৷ ‘হরকরা’ ও ‘ফ্রেণ্ড অব ইণ্ডিয়া’ পত্ৰ যুদ্ধক্ষেত্ৰ হইয়াছিল। উভয় পক্ষই উক্ত দুইপত্রে পরস্পরের প্রতি তর্ক-অস্ত্ৰ সকল নিক্ষেপ করিতেন। “হরকরা’ পত্রে টাইটলর সাহেব, প্ৰথমতঃ রামমোহন রায়কে আক্রমণ করেন। তাহাতে “রামদাস” এই কল্পিত নাম স্বাক্ষর কবিয়া, হিন্দুভাব অবলম্বনপূর্বক রামমোহন বায় তাহার এইরূপ উত্তর দিলেন যে, “রামমোহন রায়, পৌত্তলিক হিন্দু ও ত্ৰিত্ববাদী খ্ৰীষ্টিয়ান উভয়েরই পরম শত্ৰু । রামমোহন রায় ঈশ্বরের বহুত্ব ও অবতারবাদ উভয়েরই প্ৰতিবাদী। ঐ দুটি মতই হিন্দু ও ত্রিত্ববাদী খ্ৰীষ্টিয়ান, উভয়েরই মূল মত । সুতরাং এস, আমরা ( হিন্দু ও খ্ৰীষ্টিয়ান) একত্র মিলিত হইয়া আমাদের সাধারণ শত্রু রামমোহন রায়কে আক্রমণ করি।” এই উত্তরপত্ৰখানি কোথা হইতে আসিল, কেহ জানিতে পারিল না। একজন স্মৃণিত পৌত্তলিক, খ্ৰীষ্টিয়ানেব সহিত সাধারণভূমিতে দণ্ডায়মান হইতে চায়, ইহা টাইটলর সাহেব বা অপর খ্ৰীষ্টিয়ানদিগের সহ্য হইবে কেন ? তিনি অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া রামদাসের পত্রের উত্তর দিলেন । বলিলেন যে, “খ্ৰীষ্টধৰ্ম্মে ও হিন্দুধৰ্ম্মে তুলনা করা অতি অন্যায় কৰ্ম্ম ; উহাদের সাধারণ- , ভূমি এক হইতে পারে না।” ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ হইল। “রামদাস।” অতি পরিষ্কাররূপে প্ৰদৰ্শন করিলেন যে, ত্ৰিত্ববাদী খ্ৰীষ্টিয়ানের ধর্ম ও পৌত্তলিক হিন্দুর ধৰ্ম্মের ভিত্তিমূল এক ;-অবতারবাদ ও ঈশ্বরের বহুত্ব।