পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৩২ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে লোকের মন ইহার জন্য প্ৰস্তুত হইতেছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীতেই ইহার পরিণাম । সপ্তদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বেকন, এবং উক্ত শতাব্দীর শেষভাগে লক, মানবের বুদ্ধিকে অনেক পরিমাণে স্বাধীনতা প্ৰদান করিয়া যান। প্ৰাচীন দর্শনশাস্ত্ৰ সকলের বিরুদ্ধে বেকন অনেক যুদ্ধ করিয়াছিলেন। মধ্যযুগে খৃষ্টিয়ান ধৰ্ম্মমত এবং আরিষ্টটলেব দর্শনশাস্ত্ৰ, এই দুইটি মিলাইয়া মানবের চিন্তাকে বদ্ধ করিবার জন্য একটি লৌহনিগাঢ় প্ৰস্তুত কবা হইয়াছিল। মধ্যযুগে সমস্ত বিষয়ে কতকগুলি স্থিরসিদ্ধান্ত করিয়া রাখা হইয়াছিল । মনুষ্যকে কোন বিষয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা করিতে, কোন স্বাধীন মত গ্ৰহণ কবিতে, কিংবা স্বাধীনভাবে সত্যানুসন্ধান করিতে দেওয়া হয় নাই । বেকনের পূর্বে কোপানিকাস, গায়োরর্ডেনে, ক্ৰনো, গ্যালিলিও, টাইকোব্রেহি, কার্ড্যান ভেসালিয়াস প্রভৃতি অনেক মহাত্মা ভৌতিক বিজ্ঞান এবং জ্যোতিবিদ্যাব চর্চা করিয়া অনেক নূতন মত স্থাপন করিয়া মধ্যযুগের দর্শন শাস্ত্রকে ভাঙ্গিয়া দিয়াছিলেন। আরিাষ্টটলেব তৰ্কশাস্ত্র ও মনোবিজ্ঞানকে মহাপণ্ডিত বেথাস বিশেষ ভাবে আক্রমণ করেন। বেকন এই সকল দৃষ্টান্তদ্বারা “উৎসাহিত হইয়া স্থির করিলেন যে, জ্ঞানের সকল বিভাগেরই উন্নতি সাধন করিতে হইবে । এই জন্য তিনি সমগ্ৰ জ্ঞানবাজ্য পৰ্য্যবেক্ষণ করিলেন। যত প্ৰকার বিজ্ঞান হইতে পারে, তাহ নিৰ্দ্ধারণ করিলেন। তঁহার সময়ে প্ৰত্যেক বিজ্ঞানে কি পরিমাণ সত্য ছিল, কি কি অভাব ছিল, কি কি বিষয়ে নূতন গবেষণা আবশ্যক, তাহার এক বিস্তৃত বিবরণ লিখিলেন । বেকন একটি নূতন প্ৰণালী স্থির করিলেন । এই প্ৰণালী দ্বারা বিজ্ঞানের সকল বিভাগে গবেষণা ও উন্নতি চলিতে পারে। ( Novum organum, New Organ )