পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্মবিষয়ক মত ○○a অষ্টাদশ শতাব্দীর ভীয়িষ্টগণ এক্ষণে লকের পরবত্তী সময়ের কথা বলি। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে কতকগুলি চিন্তাশীল ব্যক্তি, বেকন এবং লক্‌ প্ৰদশিত যুক্তিবাদ ও স্বাধীন চিন্তা বিশেষভাবে ধৰ্ম্মবিষয়েও নিয়োজিত করিলেন । এই সকল লোককে একেশ্বরবাদী (Deists) বলে। কলিনস, টিণ্ড্যাল, টোলাণ্ড, চাবাস, মরগ্যান স্যাফটসবেরী প্রভৃতি লোক প্রধান একেশ্বববাদী (Delists) ছিলেন । বহির্জগৎ এবং মানবের জ্ঞান তাহদের ধৰ্ম্মের ভিত্তি ছিল। এই জগৎকে জ্ঞানদ্বারা অনুসন্ধান করিয়া তাহারা স্বাভাবিক ধৰ্ম্মে উপনীত হইয়াছিলেন । পাঠকবর্গের অবগতির জন্য আমরা নিম্নে তাহদের প্রধান প্রধান মতগুলি সংক্ষেপে বলিতেছি। ১ । একেশ্বরবাদ । একজন জগতের কৰ্ত্তা আছেন, ইহা তাহারা কাৰ্য্যকারণ সম্বন্ধ এবং কৌশল সম্বন্ধীয় যুক্তিদ্বারা প্ৰমাণ কবিতেন । ২ । ঈশ্বর নিয়ন্ত । প্ৰাকৃতিক নিয়ম সকল এবং অপরিবর্তনীয় নীতি সকল, এই দুই প্ৰকার নিয়মে জগৎ পরিচালিত হইতেছে। ৩। ময়ূন্যের আত্মা অমর। পরলোকে আত্মা কৰ্ম্মফল ভোগ করে। মানবাত্মা স্বাধীন। আপনার কাৰ্য্যের জন্য মনুষ্য পরমেশ্বরের নিকট দায়ী। পাপ-পুণ্যের জন্য, পারলৌকিক দণ্ড-পুরস্কার আছে। মনুষ্যের নৈতিক ও ধৰ্ম্মগত প্ৰকৃতি এবং সামাজিক অবস্থা বিচার করিয়া র্তাহারা এই সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছিলেন । সুতরাং তঁহাদের মতে পরমেশ্বর মানবের বিধাতা ও বিচারক । ৪ । পরলোকে পরমেশ্বরের পূর্ণ ন্যায়বিচার প্রকাশিত হইবে । ৫ । বহির্জগৎ এবং মনুষ্যের বুদ্ধিগত ও নৈতিক প্ৰকৃতি, সকল যুগে, জাতিনির্বিশেষে, মনুষ্যমাত্ৰকে জ্ঞান ও ধৰ্ম্ম শিক্ষা দিতেছে।