পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্মবিষয়ক মত (łbr& এরূপ বিশেষ বিধান স্বীকার করিলে পরমেশ্বরে ভ্রমপ্ৰমাদ আরোপ করিতে হয় । এ প্রকার মতে, পরমেশ্বরকে মনুষ্যতুল্য করিয়া দেখা হয়। সুতরাং প্ৰকৃতির নিয়ম উল্লঙ্ঘন করিয়া অলৌকিকভাবে তিনি যে, কোন বিধান প্রেরণ করিয়াছেন, ইহা যুক্তিবিরুদ্ধ । তবে এমন বলা যাইতে পারে যে, জগতের ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্ম প্ৰণালী সকল, স্বাভাবিক ভাবে ঈশ্বরপ্রেরিত বিধান; অর্থাৎ প্ৰকৃতিব প্ৰণালী অনুসারে, স্বাভাবিক কাৰ্য্যকারণসম্বন্ধের মধ্য দিয়া, ঐতিহাসিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে, এই সকল ধৰ্ম্ম উৎপন্ন হইয়াছে। মানবের ইতিবৃত্তের বা প্ৰকৃতির প্রণালী বা ক্রম অনুসারে এই সকল ধৰ্ম্মের উন্নতি হইয়াছে । উহা পরমেশ্বরের বিধাতৃত্বের অন্তর্গত। মানবেতিহাস ও প্ৰকৃতির প্রণালী অনুসারে এই সকল ধৰ্ম্মের উৎপত্তি। ইহাব মধ্যে বিধাতার ইচ্ছা বৰ্ত্তমান। দেশ ও কালানুসারে এই বিভিন্ন ধৰ্ম্মপ্রণালীকে বিভিন্ন ধৰ্ম্মবিধান বলা যাইতে পারে । র্যাহারা বলেন যে, সকল ধৰ্ম্মই সত্য, তাহাদের কথার উত্তরে রাজা আর একটি যুক্তি প্ৰদৰ্শন করিয়াছেন । বিভিন্ন ধৰ্ম্মের মধ্যে যে সকল বিরোধী বিধি রহিয়াছে, সে সকলকে সাময়িক বা আপেক্ষিক বলা হয় না । সেই সকল পরস্পরবিরোধী ধৰ্ম্মবিধি, চিরকালের জন্য মনুষ্যের অবশ্য-কৰ্ত্তব্য বলিয়া উক্ত হইয়াছে । যেমন ব্ৰাহ্মণ্যধৰ্ম্মের বিধিনিচয়কে চিরস্থায়ী বলা হয়। আবার মুসলমানেরা কোরাণ হইতে বিধি দেখাইয়াছেন যে, পৌত্তলিকদিগকে নিৰ্য্যাতন বা বধ করা মুসলমানদিগের পক্ষে কৰ্ত্তব্য। সুতরাং এক ধৰ্ম্ম অনুসারে ব্ৰাহ্মণদিগের পক্ষে কতকগুলি ক্রিয়ানুষ্ঠান চিরকালের জন্য কৰ্ত্তব্য । আবার অন্য ধৰ্ম্মমতে মুসলমানদিগের পক্ষে ব্ৰাহ্মণদিগকে নিৰ্য্যাতন বা বধ করা তাহাদিগের ঈশ্বরাদিষ্ট বিধি ! এস্থলে কেমন করিয়া বলা যাইতে পারে যে, এই