পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্মবিষয়ক মত న& করিতেন না। শমদমাদি সাধন, সনাতন ধৰ্ম্ম পালন, অর্থাৎ জীবের প্রতি প্রেম ও জীবের সেবা, ভক্তি ও আত্মচিন্তা বা উপাসনায় সিদ্ধ হইলে আত্মজ্ঞান লাভ হয়। তখন জ্ঞানী, সর্বদা নিত্যযুক্ত অবস্থায় থাকেন । এইরূপ ব্ৰহ্মযোগের অবস্থায় যে সকল আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা জন্মে, তাহাই উপনিষদাদি দেশীয় শাস্ত্রে, এবং বাইবেল প্ৰভৃতি বিদেশীয় শাস্ত্ৰে বৰ্ণিত হইয়াছে । এষ্ট সকল আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা যে সম্পূর্ণরূপে ভ্ৰান্তিশূন্য রাজা কখনও এরূপ মনে করিতেন না। তথাচ তিনি ঐ সকল আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার কথাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করিতেন। ঐ সকল অভিজ্ঞতা আপেক্ষিক হইলেও উহা সম্মানযোগ্য। সাধুপুরুষ ও মহাপুরুষদিগের যে সকল অভিজ্ঞতা শাস্ত্ৰে লিপিবদ্ধ রহিয়াছে, তাহ মানবজাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তিগণের অভিজ্ঞতা বলিয়া প্ৰত্যেক মানুষ্যের পক্ষে, উহা মূল্যবান ও আদবণীয়। এক সময় ছিল, যখন শাস্ত্ৰ বলিলেই অভ্ৰান্ত বা অলৌকিক বুঝাইত । এখন ক্ৰমবিকাশবাদের (Evolution) ভিত্তির উপর দণ্ডায়মান হইয়া শাস্ত্ৰ সকলকে আমরা নূতন ভাবে দেখিতে শিক্ষা করিতেছি । এখন শাস্ত্ৰ বলিলেই অভ্ৰান্ত বা অলৌকিক মনে করিতে হয় না । উহাতে মানবজাতির শ্রেষ্ঠতম জ্ঞান সঞ্চিত হইয়া” রহিয়াছে বলিয়া উহা সম্মানাস্পদ, শ্রদ্ধাযোগ্য এবং ধৰ্ম্ম-জীবনের সাহায্যকাব্বী । রাজা রামমোহন রায় শাস্ত্ৰ সম্বন্ধে উনবিংশ শতাব্দীর এই শ্রেষ্ঠ জ্ঞানের প্রথম প্ৰকাশক ও প্রচারক । ইহা তঁহার পক্ষে সামান্য গৌরবের কথা নহে। তিনি যে সময়ে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহা স্মরণ করিলে ইহা নিতান্তই বিস্ময়কর বলিয়া বোধ হয় । ব্যক্তিগত জ্ঞান ও শাস্ত্রের সামঞ্জস্য তহ ফাতুল মওয়াহিদীন প্রকাশের পরবর্তী সময়ে রাজার ষেরূপ মানসিক বিকাশ হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে একটি প্রধান কথা বলা হইল ।