পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬১০ মহাত্ম রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত উপাসনায় অনুবক্ত হয়, ইহারই জন্য তিনি যাবজীবন প্ৰয়াস পাইয়াছিলেন। তিনি হিন্দুশাস্ত্ৰ হইতেই হিন্দুদিগকে বুঝাইয়া দিতেন যে, সকল প্রকার সাকার দেবদেবীর মূৰ্ত্তি কল্পনা মাত্র, তাহাদিগের উপাসনাদ্বারা মুক্তিলাভের আশা নাই, বেদান্ত প্ৰতিপাদ্য পরব্রহ্মই আমাদিগের উপাস্য, এবং তদ্বারাই জীব মুক্তিলাভে সক্ষম হয়। তিনি খ্ৰীষ্টীয় শাস্ত্ৰ হইতে খ্ৰীষ্টিয়ানদিগকে বুঝাইয়া দিতেন যে, যীশুখ্ৰীষ্ট ঈশ্ব বাবতার নহেন, তিন ঈশ্বরের মত খ্ৰীষ্টীয় শাস্ত্রসঙ্গত নহে। একমাত্র পরমেশ্বরের উপাসনাদ্বারাই জীবের প্রকৃত কল্যাণ লাভ হয় । তিনি এই প্রকারে প্রত্যেক ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের অবলম্বিত ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰ হইতে র্তাহাদিগের নিকট স্বীয় মত প্ৰতিপন্ন করিতেন। বলিয়া তাহাদিগের এই সংস্কার জন্মিায়াছিল যে, তিনি তলহাদিগের অবলম্বিত শাস্ত্ৰকে ঈশ্ববপ্ৰেবিত অভ্রান্ত আঞ্চবাক্য বলিয়াই বিশ্বাস করিতেন। কিন্তু একদেশদশী লোকেরই এ প্রকার ব্ৰমাত্মক সংস্কার জন্মিয়াছে। হিন্দু কি খ্ৰীষ্টিয়ানশাস্ত্ৰ সম্বন্ধীয় তাহার সকল প্ৰকার পুস্তক যাহারা পাঠ করিয়াছেন, তাহারা নিশ্চয়ই বুঝিতে পারিয়াছেন যে, রামমোহন রায় সর্বশাস্ত্রের সারগ্রাহী একেশ্বরবাদী ছিলেন । তৃতীয়তঃ । কেবল তাহাব বিভিন্ন শাস্ত্ৰ সম্বন্ধীয় পুস্তক কেন ? তাহার কাৰ্য্য ও আচরণের বিষয় স্মরণ করিলেও সুস্পষ্ট বুঝা যায় যে, তিনি কোন বিশেষ সম্প্রদায়পূজিত শাস্ত্ৰকে ঈশ্বর নির্দিষ্ট অভ্রান্ত আপ্তবাক্য বলিয়া স্বীকার করিতেন না । তিনি ব্ৰাহ্মসমাজে উপবিষ্ট হইয়া ভক্তিপূর্বক বেদ-বেদান্তের ব্যাখ্যা শ্রবণ করিতেন ; আবার উক্ত সমাজেব অসাম্প্রদায়িক ভাব রক্ষা করিবার জন্য খ্ৰীষ্টধৰ্ম্মাবলম্বী ফিরিঙ্গি বালকদিগকে লইয়া আসিয়া তাহাদিগের মুখে দাউদের গীত শুনিতেন। যীশুখ্ৰীষ্ট ও তাহার প্রচারিত সত্যের প্রতি যার-পর-নাই শ্রদ্ধা প্ৰকাশ করিয়াও তিনি আপনাকে চিরজীবন হিন্দু বলিয়া পরিচয় দিয়াছিলেন। পৈতৃক বিষয়ে