পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
মহাভারত।

উচ্চৈঃশ্রবাঃ স্মৃত হইতে আবির্ভূত হইলেন। তৎপরে কৌস্তুভনামা শ্রীমন্ মহোজ্জল দিব্য মণি ঘূত হইতে সমুদ্ভূত হইয়া নারায়ণের বক্ষঃস্থলে লম্বমান হইল। লক্ষী, সুৱা, শশধর, ও মনোজব অশ্বরাজ আদিত্যপথানুসারী হইয়া দেবপক্ষে গমন করিলেন। অনন্তর মুর্তিমান্ ধরিদেব অমৃতপূর্ণ শ্বেত কমণ্ডলু হস্তে করিয়া আবির্ভূত হইলেন। এই পরমাদ্ভুত ব্যাপার অবলোকন করিয়া দানবগণ, এই অমৃত আমার আমার বলিয়া, কোলাহল করিতে লাগিল। তদনন্তর ধলকান্তি, দশনচতুষ্টয়সম্পন্ন, মহাকায় ঐরাবতনামা মাতঙ্গরাজ উৎপন্ন হইল। বজ্রধারী দেবরাজ ঐ গজরাজ অধিকার করিলেন।

 দেবাসুরগণ ইহাতেও ক্ষান্ত না হইয়া সাতিশয় মন্থন করাতে, কালকূট উৎপন্ন হইয়া ধূমবহুল প্রজ্বলিত অনলের যায় সহসা জগম্মল আকুল করিল। ঐ অতি বিষম বিষের গন্ধ আম্রাণ করিয়া ত্রৈলোক্য বিচেতন ও মুচ্ছিত হইল! ব্রহ্মা তদ্দর্শনে সাতিশয় শঙ্কিত হইয়া অনুরোধ করাতে, ভগবান্ মন্ত্রমূর্তি মহেশ্বর লোকরক্ষার্থে তৎক্ষণাৎ তাহা পান করিয়া কণ্ঠদেশে ধারণ করিলেন। তদবধি তিনি ত্রিলোকে নীলকণ্ঠ নামে বিখ্যাত হইলেন।

 দানবেরা এই অদ্ভুত ঘটনা দর্শনে নিতান্ত নিরাশ হইয়া অমৃত 'ও লক্ষী লাভার্থে ঘোরতর বিরোধ উপস্থিত করিল। তখন নারায়ণ, মোহিনী মায়া অবলম্বন করিয়া স্ত্রীরূপ পরিগ্রহ পূৰ্বক, দানবদলের নিকট উপস্থিত হইলেন। মুঢ়মতি দৈত্য দানবগণ তাঁহার পরমাদ্ভুত রূপলাবণ্য অবলোকনে মোহিত ও তগতচিত্ত হইয়া তাঁহাকে অমৃত প্রদান করিল।