পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
মহাভারত।

সকল প্রাপ্ত হয়, সেইরূপ যুগপ্রান্তে সমুদায় পদার্থ স্ব স্ব নাম, রূপ, ও স্বভাব প্রাপ্ত হইয়া থাকে। অনাদি, অনন্ত, সর্ব্বভূতসংহারকারী সংসারচক্র এই রূপে পরিভ্রমণ করিতেছে।

 ত্রয়স্ত্রিংশৎ সহস্র, ত্রয়স্ত্রিংশৎ শত, ত্রয়স্ত্রিংশৎ দেবতা সংক্ষেপে সৃষ্ট হইলেন[১]। আর বৃহদ্ভানু, চক্ষু, আত্মা, বিভাবসু, সবিতা, ঋচীক, অর্ক, ভানু, আশাবহ, রবি, ও মহ্য, দিবের[২] এই একাদশ পুত্র জন্মিলেন। সর্ব্ববকনিষ্ঠ মহ্যের পুত্র দেবভ্রাজ, তৎপুত্র সুভ্রাজ। সুভ্রাজের দশজ্যোতিঃ, শতজ্যোতিঃ, সহস্রজ্যোতিঃ নামে তিন পুত্র হইলেন। দশজ্যোতির দশ সহস্র পুত্র, শতজ্যোতির লক্ষ পুত্র, ও সহস্র জ্যোতির দশ লক্ষ পুত্র


  1. ত্রয়স্ত্রিংশৎসহস্রাণি ত্রয়স্ত্রিংশচ্ছতানি চ।
    ত্রয়স্ত্রিংশচ্চ দেবানাং সৃষ্টিঃ সংক্ষেপলক্ষণ॥

     এই মূলের যথাশ্রুত অর্থ লিখিত হইল। শতসহস্রাদি সংখ্যা পরস্পর বিরুদ্ধ বোধ হইতেছে। এই পরম্পরবিরুদ্ধ ত্রিবিধ সংখ্যার টীকাকার নীলকণ্ঠ এই সমন্বয় করিয়াছেন যে, অষ্ট বসু, একাদশ রুদ্র, দ্বাদশ আদিত্য, ইন্দ্র, ও প্রজাপতি এই ত্রয়স্ত্রিংশৎ দেবতা। ত্রয়স্ত্রিংশৎ শত অথবা ত্রয়স্ত্রিংশৎ সহস্র সংখ্যা তাহাদিগের পরিবারাদি সহ গণনাভিপ্রায়ে নির্দ্দিষ্ট হইয়াছে। এই বাহুল্য সংখ্যাও সংক্ষেপসৃষ্টি অভিপ্রায়ে উল্লিখিত। বিস্তারিত সৃষ্টি অভিপ্রায়ে পুরাণান্তরে ত্রয়স্ত্রিংশৎ কোটি সংখ্যার উল্লেখ আছে। অর্জ্জুনমিশ্র প্রথমতঃ এইরূপ ব্যাখ্যা লিখিয়া পরিশেষে যথাশ্রুত গ্রন্থার্থ সামঞ্জস্য সংস্থাপনে ব্যগ্র হইয়া ত্রয়স্ত্রিংশং সহস্র ত্রয়স্ত্রিংশৎ শত ও ত্রয়স্ত্রিংশৎ এই তিনের সমষ্টি করিয়াছেন, অর্থাৎ ৩৩৩৩৩৩ দেবতাদিগের সংক্ষেপ সৃষ্টি।

  2. অর্জ্জুনমিশ্রমতে দিব্ শব্দের অর্থ স্বর্গাধিষ্ঠাত্রী দেবতা অথবা অদিতি।