পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
১১৭

হইতেছেন, গাত্রোত্থান পূর্বক অচিমন করিয়া সন্ধ্যোপাসনা কর। অগ্নিহোত্রের সময় উপস্থিত, পশ্চিম দিকে সন্ধ্যা প্রবৃত্ত হইতেছে। মহাতপাঃ ভগবান্ জরৎকারু, স্বীয় সহধর্মিণীর বাক্য শ্রবণে কোষপরবশ হইয়া কহিলেন, হে ভুজঙ্গমে! তুমি আমার অবমাননা করিলে, আর আমি তর সমীপে অবস্থিতি করিব না, অতঃপর স্বস্থানে প্রস্থান করিব। আমার স্থির সিদ্ধান্ত আছে, আমি নিদ্রাগত থাকিতে সূর্যদেবের সামর্থ্য কি যথাকালে অস্তুগমন করেন। সামান্য ব্যক্তিও অবমানিত হইলে অবমাননাস্থলে বাস করিতে পারে না; আমার অথবা মাদৃশ ধর্ম্মশীল ব্যক্তির কথাই নাই।

 জরৎকার, স্বামীর এইরূপ হৃদয়কম্পকর বাক্য শ্রবণে সাতিশয় ভীত হইয়া, নিবেদন করিলেন, ভগবন্! তোমার ধর্ম্মলোপ হয়, এই ভয়ে আমি তোমার নিদ্রাভঙ্গ করিয়াছি, অবমাননার অভিসন্ধিতে করি নাই। তখন মহাতপাঃ জরৎকারু ঋষি সাতিশয় কোপাবিষ্ট ও ভার্য্যাত্যাগাভিলাষী হইয়া কহিলেন, হে ভুজঙ্গমে। আমার বাক্য মিথ্যা হইবার নহে, আমি অবশ্যই প্রস্থান করিব। পূর্ব্বে বাসগৃহে তোমার সহিত এই নিয়ম করিয়াছিলাম। যাহা হউক, যত দিন ছিলাম, সুখে ছিলাম, এক্ষণে চলিলাম। তোমায় ভ্রাতাকে বলিও, মুনি চলিয়া গিয়াছেন। আর, আমি প্রস্থান করিলে পর, তুমিও শোকাকুল হইও না।

এইরূপ স্বামিবাক্য শ্রবণে জরৎকারুর সহসা মুখশোষ ও হৃদয়কম্প হইল। পরিশেষে ধৈর্য্য অবলম্বন করিয়া অপূর্ণ লোচনে গদগদ বচনে কৃতাঞ্জলিপুটে নিবেদন করিলেন, হে ধর্ম্মজ্ঞ! তোমার আমাকে পরিত্যাগ করা উচিত নহে। দেখ,

২৫