করলেন, তাঁদের নাম ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডু। অম্বিকা পুনর্বার ঋতুমতী হ’লে সত্যবতী তাঁকে আর একবার ব্যাসের কাছে যেতে বললেন, কিন্তু মহর্ষির রূপ আর গন্ধ মনে ক’রে অম্বিকা নিজে গেলেন না, অপ্সরার ন্যায় রূপবতী এক দাসীকে পাঠালেন। দাসীর অভ্যর্থনা ও পরিচর্যায় তুষ্ট হয়ে ব্যাস বললেন, কল্যাণী, তুমি আর দাসী হ’য়ে থাকবে না, তোমার গর্ভস্থ পুত্র ধর্মাত্মা ও পরম বুদ্ধিমান হবে।
এই দাসীর গর্ভে বিদুর জন্মগ্রহণ করেন। মাণ্ডব্য নামে এক মৌনব্রতী ঊর্ধ্ববাহু তপস্বী ছিলেন। একদিন কয়েকজন চোর রাজরক্ষীদের ভয়ে পালিয়ে এসে মাণ্ডব্যের আশ্রমে তাদের অপহৃত ধন লুকিয়ে রাখলে। রক্ষীরা আশ্রমে এসে মাণ্ডব্যকে প্রশ্ন করলে, কিন্তু তিনি উত্তর দিলেন না। অন্বেষণের ফলে চোরের দল অপহৃত ধন সমেত ধরা পড়ল, রক্ষীরা তাদের সঙ্গে মাণ্ডব্যকেও রাজার কাছে নিয়ে গেল। রাজার আদেশে সকলকেই শূলে চড়ানো হ’ল, কিন্তু মাণ্ডব্য তপস্যার প্রভাবে জীবিত রইলেন। অবশেষে তাঁর পরিচয় পেয়ে রাজা ক্ষমা চাইলেন এবং তাঁকে শূল থেকে নামালেন, কিন্তু শূলের ভগ্ন অগ্রভাগ তাঁর দেহে রয়ে গেল। মাণ্ডব্য সেই অবস্থাতেই নানা দেশে বিচরণ ও তপস্যা করতে লাগলেন এবং শূলখণ্ডের জন্য অণী[১] মাণ্ডব্য নামে খ্যাত হলেন। একদিন তিনি ধর্মরাজের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন্ কর্মের ফলে আমাকে এই দণ্ড দিয়েছেন? ধর্ম বললেন, আপনি বাল্যকালে একটি পতঙ্গের পুচ্ছদেশে তৃণ প্রবিষ্ট করেছিলেন, তারই এই ফল। অণীমাণ্ডব্য বললেন, আপনি লঘু পাপে আমাকে গুরুদণ্ড দিয়েছেন। সর্বপ্রাণিবধের চেয়ে ব্রাহ্মণবধ গুরুতর। আমার শাপে আপনি শূদ্র হ’য়ে জন্মগ্রহণ করবেন। আজ আমি এই বিধান দিচ্ছি—চতুর্দশ[২] বৎসর বয়সের মধ্যে কেউ কিছু করলে তা পাপ ব’লে গণ্য হবে না। অণীমাণ্ডব্যের অভিশাপের ফলেই ধর্ম দাসীর গর্ভে বিদুররূপে জন্মেছিলেন।
১৯। গান্ধারী, কুন্তী ও মাদ্রী—কর্ণ—দুর্যোধনাদির জন্ম
ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডু ও বিদুরকে ভীষ্ম পুত্রবৎ পালন করতে লাগলেন। ধৃতরাষ্ট্র অসাধারণ বলবান, পাণ্ডু পরাক্রান্ত ধনুর্ধর, এবং বিদুর অদ্বিতীয় ধর্ম-