পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১১৭ ) পারে। রাজবল্লভ এই দত্তক পুত্রের কৌলীন্য রক্ষা করিতে কৃতসংকর হইয়া চন্দনের অনুষ্ঠান করতঃ বঙ্গদেশীয় সমস্ত বৈদ্যসস্তানগণকে নিমন্ত্রণ করেন। তাহার নিমন্ত্রণানুসারে বঙ্গীয় সমাজের প্রায় প্রত্যেক বংশীয় বৈদ্য রাজনগরে সমবেত হইয়৷ একবাক্যে ঐ দত্তক পুত্রের দোষমার্জনপূৰ্ব্বক তাহাকে কুলীন বলিয়া স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন। ঐ দত্তক পুত্রের নাম গোপীকৃষ্ণ সেন। গোপীকৃষ্ণের বংশধরগণ এখনও জীবিত আছেন এবং তাহারা বৈদ্যসমাজে কৌলীন্ত মৰ্য্যাদা উপভোগ করিতেছেন (১)। কেহ কেহ বলেন, রাজবল্লভের প্রেরিত লোক বিধবা-বিবাহের প্রস্তাব লইয়া নবদ্বীপে উপস্থিত হইলে কৃষ্ণচন্দ্র ৰ্তাহাদিগকে ভোজ্যদ্রব্যের সহিত একটি গোবৎস উপহার প্রদান করিয়াছিলেন, ও আগস্তুকগণ এই অভিনব উপহারের কারণ জিজ্ঞাসা করিলে তিনি তাহাদিগকে বলেন, শাস্ত্রের বিধানদ্বারা বহুকাল যাবৎ অপ্রচলিত বিধবা-বিবাহ পুনঃ প্রচলিত হইতে পারিলে শাস্ত্রানুসারে গোমাংসভক্ষণেও আপত্তি হইতে পারে না। রাজবল্লভের দূত এই উত্তর শ্রবণে লজ্জিত হইয়া নবদ্বীপ হইতে প্রস্থান করে । কাহারও মতে এই ঘটনা নেপালে সংঘটিত হইয়াছিল। এই সমস্ত জনশ্রুতির মধ্যে কোনটি সত্য এবং কোনটি মিথ্যা তাহ নির্ণয় করা সহজ সাধ্য নহে। তবে এই পর্য্যন্ত বলা যাইতে পারে যে, নবদ্বীপাধিপতি রাজবল্লভের পক্ষসমর্থন করিলে বিধবা-বিবাহ ঐ সময় হইতে বঙ্গদেশে পুনঃ প্রচলিত হইত (১) গোপীকৃষ্ণ সেনের পুত্রের নাম রাধারমণ সেন । রাধারমণের পুত্র কাশী চন্দ্র সেন, কাশীচত্রের পুত্র চন্দ্রকুমার, কৃষ্ণনাথ, নিশিনাথ ও কুঞ্জলাল। কৃঞ্চনাথের পুত্র তেজেন্দ্র ও শৈলেন্দ্র । নিশিনাথের পুত্র ভূপেন্দ্র এবং কুপ্পলালের পুত্ৰ ফণিভূষণ ।