পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SO জীবন-চরিত মাণে অর্থসাহায্য করিয়াছিলেন । রাজনারায়ণ দত্ত, সাগরদাড়ীর বাটীতে থাকিয়া, দ্বিতীয় বার দারপবিগ্রহ করেন । জাভুবীদাসী সে সময় কলিকাতায় ছিলেন । বিবাহের পর তিনি পত্নীকে এই মৰ্ম্মে এক পত্ৰ লিখিয়াছিলেন ; “আমি যে কুকাৰ্য্য করিয়াছি, তাহা তুমি শুনিয়াছ ; যদি ইহাতে আমার উপর অসন্তুষ্ট হও, তবে আমার জীবন পরিত্যাগ করাই শ্ৰেয়ঃ। পৃথিবীতে দুইটী মাত্র লোকের নিকট আন্তরিক ভালবাসা পাওয়া যায় । এক জননী, অপর সহধৰ্ম্মিণী ; আমার জননী স্বর্গে গিয়াছেন, কেবল তোমাব জন্যই আমি সংসারাশ্রমে রহিয়াছ । যখন শুনিব, তোমাব ভালবাসায় আমি বঞ্চিত হইয়াছি, তখনই এ সংসার ত্যাগ করিব * * * * । তোমার জন্য যে একটা সেবিকা আনা হইয়াছে, কাল তাহাকে পিত্ৰালয়ে পাঠাইতে হইবে ।” রাজনারায়ণ দত্ত জাহ্রবীদাসীকে কিরূপ আদর করিতেন, তাহা তাহার দ্বিতীয়। পত্নীকে সেবিকা বলিয়া উল্লেখ করাতেই প্ৰমাণিত হইতেছে । বাস্তবিক ও স্বামীর মেহের উপর জাতুবী দাসার এরূপ একাধিপত্য ছিল যে, তাহার সপত্নীগণ র্তাহাৰ নিকট সেবিকারই ন্যায় থাকিতেন । স্বামীর আদেশক্রমে তাহারা তাহাকে প্ৰভু-পত্নীর ন্যায় ভয় ও সন্মান করিতেন, এবং তিনি, অনুগ্রহপূর্বক, তাহাদিগকে যাহা কিছু বস্ত্ৰলঙ্কার দিতেন, তাহাতেই কৃতাৰ্থ বোধ করিতেন । পত্নীর প্রতি এরূপ সমাদর ও অনুরাগ সত্ত্বেও রাজনারায়ণ দত্ত যে পুনর্বার বিবাহ করিয়াছিলেন, তাহাতে, বোধ হয়, অনেকেই বিস্মিত হইবেন । কিন্তু ইহাতে বিস্ময়ের বিষয় কিছুই নাই। পত্নী সত্ত্বে পুনৰ্ব্বার বিবাহ যে দূষণীয়, সে কালের ধনাঢ্য ব্যক্তিদিগের মধ্যে অনেকেই তাহা মনে করিতেন। না । বিশেষতঃ দত্তজ মহাশয়, বৃদ্ধ বয়স পৰ্যন্ত, একান্ত বিলাসী ও ভোগসুখ-নিরত ছিলেন। মধুসুদন ধৰ্ম্মভ্ৰষ্ট হওয়াতে পিণ্ড-লোপের আশঙ্কাও তাহার হৃদয়ে স্বভাবতঃ প্ৰবল হইয়াছিল । এই সকল কারণেই