তো দেখা মাত্র টের পেয়ে যাবে এ তার রামও নয় লক্ষ্মণও নয়। তবু, নতুন করে পোষ মানাবার জন্য বাচ্ছা বেজী পেলেও হয়তো রূপা একটু খুশী হবে।
পোষ মানাবার জন্য? কি সর্বনাশ? একথাটা তো তার খেয়াল হয় নি। রামলক্ষ্মণের মত দুটি বেজী নিয়ে গেলে রূপা হয়তো চেহারা দেখে তফাত বুঝতে পারবে না, কিন্তু পোষা বেজী আর বুনো বেজীর তফাত ধরতে তার সময় লাগবে কতক্ষণ।
নাগা হতাশ হয়ে বাগদীপাড়ায় গেল। উপায় যখন নেই, বুনো বেজী যদি পাওয়া যায় তাই নিয়েই যেতে হবে রূপার কাছে। এই সব ভাবতে ভাবতে বাগদীপাড়ায় গিয়েই তো নাগার চক্ষুস্থির। এগারটি বেজী ধরে সাতজন তার অপেক্ষা করছে।
দুটির বেশী বেজী দরকার নেই শুনে সে বেচারীরা বড়ই দমে গেল। বেছে বেছে রামলক্ষ্মণের মত দুটি বেজী কিনে নাগা ফিরে গেল বাড়ীতে। দেখে আরও খুশী হয়ে কণিকা ভাবল, হুঁ বেজীর পর বেজী আনা হচ্ছে আমার রাগ ভাঙ্গাতে। কিন্তু যতই কর বাপু, নিজে এসে কথা না বললে আমি কথা বলছি না।
কিন্তু তাকে দেওয়ার বদলে রামলক্ষ্মণের বাক্সে পুরে বাক্সসুদ্ধ বেজী দুটি নিয়ে নাগা চলে যাচ্ছে দেখে কণিকা আর চুপ করে থাকতে পারল না, ‘কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’
‘রূপাকে দিমু—যার রামলক্ষ্মণরে খুন করছ, তারে।’
বেজী দেখে রূপা বলল, ‘আমার রামলক্ষ্মণ মইরা গেছে।’
নাগার মুখ দিয়ে কথা বেরোল না। কি বোকাই সে ছিল! রামলক্ষ্মণের জায়গায় অন্য বেজী দিলে রূপা জানতে পারবে কিনা এই কথাটাই সে এতক্ষণ ভেবেছে, রামলক্ষ্মণের মরার খবরটা যে রূপা আগেই পেয়েছে সেটা একবার তার মনেও হয়নি।
‘পুষবি বইলা আনছি রূপা।’
‘কত বুদ্ধি! বুড়ো বেজী পোষ মানে?’
‘একটা বাচ্চা আছে, আনুম?’