পাতা:মাটি-ঘেঁষা মানুষ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ও কি, মামী কি বলছিস তুই ? বেশী বর্ষা নামল, নদী ফুলল, বন্যা হল, দায়ি হলাম মুই ? পাপ করে এয়েছিস তো ! দু’বছর ঢল নামেনি। পুড়ে-জলে গেছে আদেক ধান। তুই এলি আর ঢল নেমে শেষ করে দিল। এবারের চাষ। তোর মামাই তো বললে, সবে বানাশী মেয়ে এসেছে, এমন ঢল বিশ বছরে নামেনি। এক মণ ধান উঠবে কিনা সন্দ” এবার । বলতে বলতে কি যেন ঘটে যায় গিরির চেতনায়। জমা করা ভয়-ভাবনার সঙ্গে ভীষণ বন্যার ভয়ঙ্কর ভয়-ভাবনা মিশে ফেটে চুরমার হয়ে যায় তার ধৈৰ্য্যের ঘাট, চুরমার হয়ে যায় তার সহে্যুর বঁাধ । নেমে আসে বঁাধ-ভাঙা বন্যার মতই বিকারের ঢল । রকম দেখে রেবতীকে ভাবতে হয়, মাথা কি খারাপ হয়ে গেল গিরির ? সে কি ভুলে গেল এইমাত্র তাকে গুরুজন বলে পায়ে হাত দিয়ে প্ৰণাম করছিল। রেবতী ? আছড়ে পড়ে রেবতীর পা জড়িয়ে ধরে গিরি হাউ-হাউ করে কঁাদে, তার পায়ে মাথা কুটিতে কুটিতে বলে, তুই ফিরে যা । সকেবানাশী ফিরিয়ে নিয়ে যা সবে বানাশ । মাঘফাগুনে বাচ্চ বিয়োতে হবে-মাঠের ধান শেষ হয়ে গেল। কি খেয়ে বঁচিব মাঘ-ফাগুন তাক ? রেবতীকে শুয়ে পড়তে হয়। নইলে পা আঁকড়ে ধরা গিরিকে বুকে আঁকড়ে ধরা যায় না। গিরির মাথাটা বুকে চেপে ধরে কানে মুখ লাগিয়ে বলে, কেন এত ভাবছিস মামী ? ব্যাকুল হচ্ছিস ? তুই মরলে আমি মরলে কার কি এসে Ayr