পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৪৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরতলী আসবার জন্য মেয়েজামাই আপনার পাগল হয়ে আছে, কেবল না ডাকলে ভরসা। পাচ্ছে না। আসতে। আপনি যদি ডেকে পাঠান-” সত্যপ্রিয় তার পরিচিত মৃদু হাসির সঙ্গে বলিল, “ডেকে পাঠালেই তো। ওরা भiथा ब्र bgछ बनत्व, फ्रैनब्र-भों ? যশোদা অবাক হওয়ার ভাণ করিয়া বলিল, “মাথায় চড়ে বসবে ? আপনার ? আপনার সামনে মুখ তুলে কথা কইবার সাহস ওদের আছে কিনা সন্দেহ, মাথায় চড়বে। তাছাড়া, বেয়াদবি যদি একটু করেই, মেয়ে-জামাইকে সিধে রাখতে ' পারবেন না ?” সত্যপ্রিয় ভাবপ্রবণতার চিহ্নও দেখাইল না, শান্তভাবে বলিল, ‘ওরা নিজে থেকেই আসবে।” যশোদাও তা জানিত, কিছুক্ষণ সে আর বলিবার কিছু খুজিয়া পাইল না। সত্যপ্ৰিয়ের নির্বিবকার ভাব যশোদাকে সত্যসত্যই দমাইয়া দিয়াছিল। সত্যপ্ৰিয়ের সঙ্গে কথা বলার এই একটা মস্ত অসুবিধা, এত সহজে সে মানুষের মধ্যে নিজের প্রয়োজনীয় অনুভূতি জাগাইয়া তুলিতে পারে, উত্তেজনা, ভয়, আনন্দ, উৎসাহ, হতাশা এসব যেন নিজের ইচ্ছামত পরের মধ্যে সংক্রামিত করিবার ক্ষমতা তার আছে । সত্যপ্ৰিয়ের উদাসীনতা দেখিয়া মনে হয়, মেয়ে-জামাই-এর কথাটা আলোচনা করাও সে প্রয়োজন, মনে করে না । ( অতি সাধারণ একটা ব্যাপার, সংসারে এমন অনেক হয়, আপনা হইতেই সব ঠিক হইয়া যাইবে । এজন্য মাথাঘামানোর কিছু নাই । যশোদারও মনে হইতে থাকে, ব্যাপারটা সে যত গুরুতর মনে করিয়াছে, হয়তো তেমন কিছুই নয়। এবিষয়ে আর কিছু না বলাই উচিত । তবে কোন কাজ আরম্ভ করিয়া মাঝখানে হাল ছাড়িয়া দেওয়া যশোদারও স্বভাব নয় । “ত হয়তো আসবে, কিন্তু তার তো দেৱী আছে। খুকীর মুখ চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনাই ভাল। আপনার ছেলেকে যদি পাঠিয়ে দেন-” সত্যপ্ৰিয় মাথা নাড়িয়া বলিল, “আমি কাউকে পাঠাতে পারব না ।” কথাটা সে এমন স্পষ্টভাবেই বলিল, যে মাথা নাড়িবার কোন প্রয়োজনই ছিল না। যশোদা হাঁটু গুটিাইয়া মেঝেতে ডান হাতের তালু পাতিয়া একটু কান্ত হইয়া মেঝেতে মেয়েদের বসিবার চিরন্তন ভঙ্গিতে বসিয়াছিল। উঠিয়া দাঁড়ানাের ভূমিকা হিসাবে সে এবার সোজা হইয়া বসিল । আর তার কিছুই বলিবাৱা নাই । 8)