পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yr মানিক গ্ৰন্থাবলী ‘জানি নে তা ঠিক। কিন্তু জানলে অবাক হবাৱ কি আছে শুনি ? সাইকেল চেপে পটল যখন অনেক দূরে গেছে তখন যেন চিন্তামণির মনটা । উঠলি কেমন করে। শ্রাবণ শেষের বৃষ্টি ছাড বাতাস-ছাড়া দিন, ভাদ্র মাসের উজ্জল কড রোদে ঘাম ছোটানো গরম | পূজোর আর কাঁটা দিন বা বাকী । এমন দিনে এই বিদেশে সে বিদেশিনী গো ! একেবারে একাকিনী সে । লাল কঁাকরের পথটা এখন ধুলোর কাদায় কাদা, হে খায় হোখায় গাড়ীর চাকার গর্তে জমা জল । দুপুর বলেই লোক চলাচল কম, नशेळ পথে মাকুব কিছু কম চলে না । এদিক ওদিক দূরে কাছে গা চোখে পডে ঢের, তবু যেন ক্ষেত আর ডাঙ্গায় চারদিকটা তেপান্তরের মাঠ । ডোব নালায় খাল-বিলে কোপে ঝাড়ে বনবাদাড়ে গাছ-আগাছায় ঘেষা ঘোষি চব্বিশ পরগণার গা, খিদিরপাডার চারিদিকে। ছায়া যেন আপনি নিবিড়, কচুরিপানার পাকাল গন্ধে ভরা। এখানে সৰ ফাক, আশপাশের গাছগুলিকে যেন গুণে নেওয়া যায়। পথের দু’পাশে খানিক দূরে দূরে মানুষ গাছ রেখেছে, তার বেশীর ভাগই শাল, শিরীষ অর কদম, — দুদিক পানে দূরে তাকালে তবেই চোখে পড়ে তাদের সারি বাধা রূপ । ক্ষেতগুলি আজি ফসলে ঢাকা, ডাঙ্গা মাঠে বড় বড় তৃণ । ঝাকাটি ঝোপের পৰ্যন্ত সরস নবীন রূপ। কালচে রাঙ্গা কঁকার মাটির পথটি ছাড়া ক’দিন আগের এবডো খেবড়ো ব্লাঙ্গামাটির শুকনো দেশ সবুজ হয়ে গেছে। অনেক দূরে শালবনের সবুজ সেদিনও ছিল, লাল মাটির ধূলোয় ষেদিন এই শিরীষ গাছের পাতা পর্যন্ত श्व (िशछिल लावा । প্রথম বর্ষণে তখন গাছের পাতার ধুলো ধুয়ে সাফ হয়ে গেছে। কোন ক্ষেতে লাঙ্গলের মুখে মাটি উঠছে ডেলা ভেলা, মই লাগিয়ে ভাঙ্গতে হবে। কোন ক্ষেতে, হয়তো ঠিক পাশের ক্ষেতেই লাঙ্গলের ফলা ভাবছে না। মাটিতে। বড় বড় ফাটল ছিল এ ক্ষেতে শো শো কৰে জল শুষে নিয়েছে, সবটা ক্ষেত নরম হয়নি । গৌরাঙ্গের বড় ক্ষেতটার একপাশে একটুখানি জমিতে লাঙ্গল চলল, তাইতে কাহিল হয়ে পড়ল বলদ দুটো। লাঙ্গল যেন নোঙর হয়ে ঠেকে যাচ্ছে । “খেটে দি চান্দকাক ?” | চন্দ্ৰকান্ত গৌরাঙ্গের আসল কাক, সম্প্রতি ভাইপোের সঙ্গে ভিন্ন হয়েছে। ভাৰে ভাৰে ভিন্ন হওয়া, ৰূগড়া ৰিবাদ নালিশ ফরিয়াদ কিছুই ঘটেনি। মাসের