পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VNUR शांनिक इांदी পরিত্যক্ত অসহায়েরই মতো। মনগুলি ভাঙা, দেহগুলিও। আজ কী করে বাঁচা যায়। আর কাল কী হবে এই চেষ্টা আর ভাবনা নিয়ে এমন ব্যস্ত আর বিব্রত সবাই যে জোট বেঁধে ঘোট পাকাবার অবসর আর তাগিদ যেন জীবন থেকে মুছে গেছে। সকলকে উত্তেজিত করতে গিয়ে এই সত্যতা বেরিয়ে আসে। রামপাদ’র কাণ্ডের কথাটা হু ই দিয়ে সেরে দিয়ে সবাই আলোচনা করতে চায় ধান চাল মুণ কাপড়ের কথা, যুদ্ধের কথা । পেতে চায় বিশেষ অনুগ্রহ, সামান্য সুবিধা ও স্বব্যবস্থা। একটু আশা-ভরসার ইঙ্গিত পেলে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে, যার চিহ্নটুকু দেখা যায় না, রামপদ’র বিচার থেকে রোমাঞ্চ লাভের সুনিশ্চিত সম্ভাবনায় । কয়েকজন তো স্পষ্টই বলে বসল, “ছেড়ে দ্যান না, যাক গে। অমন কত ঘটছে, ক’দিন সামলাবেন ? যা দিনকাল পড়েছে।” আপন জনকে যারা হারিয়েছে দুভিক্ষে মহামারীতে বাঁচবার জন্য সহরে পালিয়ে, আপনজন যাদের হয়ে গেছে নিরুদেশ, বিদেশ থেকে ফিরে যারা ঘর দেখেছে খালি, এ ব্যাপারে চুপ করে থাকার আর ব্যাপারটা চাপা দেবার ইচ্ছা! তাদেরই বেশী জোরালো । এ রকম কিছুই ঘটেনি এমন পরিবারও ক’টাই | ख्ांछ् ! ঘনশ্যাম একটু দমে যায়। বোঝার উপর শাকের আঁটি চাপায় গোকুল। “বাড়াবাড়ি করলেন খানিক ৷”

  • “সাধু হিদে নখাদের দিয়ে মেরে লাল করে দিতেন এক দিন, চুকে যেত, বিচার-সভা ডেকে বসলেন। দশ জনে যদি দশটা কথা কয়, যাবেন কোথা ? দুগ’গার কথা যদি তােলে কেউ ?

“তুই চুপ থাক হারামজাদা।” ঘনশ্যাম বলে ধমক দিয়ে, কিন্তু হাত তার উঠে গিয়ে ঘাঁটতে থাকে বুকের ঘন লোম। জালাও করে মনটা রামপদ’র স্পৰ্দ্ধায়। সে নাকি দাওয়ায় চালা তুলেছে, বেড়া দিয়েছে, গুছিয়ে নিচ্ছে সংসার। বলে নাকি বেড়াচ্ছে, গায়ে না টিকতে দিলে বৌকে নিয়ে চলে যাবে অন্য কোথাও । আগের চেয়ে কত বেশী খাতির করছে ঘনশ্যামকে লোকে আজ, তুচ্ছ একটা রামপদ’র কাছে সে হার মানবে । মনটা জ্বালাও করে ঘনশ্যামের । পরদিন বসবে বিচার-সভা । সদরে জরুরী কাজ সাৱতে বেরোবার সময় ঘনশ্যাম ঠিক করে যায় সকাল সকাল রওনা দিয়ে বিকাল বিকাল গায়ে ফিরবে, গিরির কাছে আজ আর যাবে না। কাজ শেষ হয় বেলা দু’টাের মধ্যেই, কিন্তু