পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Σ Ν. गांनिक @jश्हांदर्की রাণীবালার আদুরে বিড়াল এসে এক টুকরো মাছ মুখে তুলে নিল। মাছকাট বঁটিটা তুলেই সূৰ্যকান্ত বসিয়ে দিল এক কোপ। রাণীবালার আদুরে বিড়াল একটা আওয়াজ পর্যন্ত না ক’রে মরে গেল। মাছের টুকরোটা মুখ থেকে খসে পড়ায় লক্ষ্মীরাণী সেটা তুলে রাখল। চুপড়িতে), পথের ধার থেকে মরা বিড়ালটা কুডিয়ে নিয়ে গেল চণ্ডী বসাক। চাল ছিল না। কিন্তু ঘরে তার একটু নুণ আর একটু হলুদ-লঙ্কা ছিল। ঘুরে ঘুরে হত্যা দিয়ে দুটি খুদকুঁডো চণ্ডী যোগাড় ক’রে নিয়ে এল। ঝাল ঝাল বিড়ালের মাংস দিয়ে সে-দিন সে দু’বেলা ভোজ খেল সপরিবারে ।

  • হত্যাকাণ্ডের খবরটা রাণীবালা পেল পাচুর মার কাছে। ও-বাড়িতে পাচুর মা দু'টি চালের জন্য গিয়েছিল, অনেকক্ষণ ধন্ন দিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত পায়নি। নিজের চোখে সে ঘটনাটা দেখেছে। আগাগোডা ) এ কি কাণ্ড মা, ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘর করিস, হিংসে করে মা ষষ্ঠীর বাহনকে মারলি একাদশীর দিন, এত শক্ৰতা ?

“দু'টি চাল দিবি বৌ ? দে মা, দু'টি চাল ? বিড়াল ছানা দেব তোকে একটা, তোর পায়ে ধরি খুদকুডো যা’হোক দুটি দে।” ‘কোথা পাব গো ? চাল বাড়ন্ত । খুদকুঁডো শাউড়ী আগলে আছে।” বলে(বিডালের শোকে রাণীবালা র্কান্দতে থাকে, বাড়ীর সকলের কাছে নালিশ জানায় । সামলাতে না পেরে ডুকরে কেঁদে ওঠে, অভিশাপও দিয়ে বসে। ও-পাশের খুনেদের । ছেলেবেলা থেকে রাণীবালা বিড়াল পুষতে ভালবাসে, কত পোষা বিড়াল তার মারে আর হারিয়ে গেছে । ও-বাড়ীর লোক হত্যা না ক’রলে হয়তো বিভালটার জন্য এত শোক তার হত না । কিন্তু এমনি অবাক কাণ্ড, এই নিয়ে কুরুক্ষেত্র বাধানের বদলে জনাৰ্দন তাকেই ধমক দিয়ে বলল, “আঃ” চুপ কর বাছা । বাড়াবাড়ি কোরো না।” চন্দ্ৰকান্তও প্রায় ধমকের সুরে বলল, “তোমার বিড়াল যায় কেন চুরি করে খেতে ? রাণীবালা হ'কচাকিয়ে যায়, ভেবে পায় না ব্যাপারখানা কি । রাগে অভিমানে তার গা জালা করে, ভাবে না খেয়ে শুয়ে থাকবে কিন্তু ভরসা পায় না। কারো পেট কলমীশাক-সেদ্ধ দিয়ে দুটি ভাত খেয়ে ভরে না। কেউ যদি তাকে খাওয়ার জন্য সাধাসাধি না করে সে না খেয়ে গোসা ক’রে শুয়ে থাকলেও ! চন্দ্ৰকান্ত তাকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেয়া-পুলপারের জমিটা না বেচে আর উপায় নেই। গোবর্ধন ও জনাৰ্দন দু’জনে মিলে না বেচলে জমিটা বেচবারও উপায়