পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SO মানিক গ্ৰন্থাবলী একটা মানুষ আছে আছে হঠাৎ একটু ডুকরে কঁাদল নয় বুক চাপড়ে হায়হায় করল নয় মুখে মেঘ নামিয়ে আনল— সেটা হল শোক। রঘুর একটু বদল হয়েছে, যার বাড কমা নেই, যাতে অসাম্য নেই। বরাবর সে এমনি হলে লোকে জানত যে লোকটাই এমনি । কিন্তু দুৰ্গা মারা যাবার পর সে বদলেছে বলে সময় সময় মানুষ সেটা টের পাচ্ছে । সমস্ত খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করে গৌর বলে যায়, এদিকে দিনের আলো মান হয়ে আসে আকাশে । সন্ধ্যার আগে বাবুর ছেলেকে বাড়ী ফিরিয়ে না নিয়ে গেলে মুস্কিল হবে চিন্তামণির, কিন্তু শেষ পর্যন্ত না শুনে সে উঠেই বা যায় কি করে ? উসখুসি করতে করতে সে একসময় উঠে দাড়ায়। “শোন, তোমায় বলতে ভুলে গিাইছি। বাবু তোমায় ডেকেছেন!” ‘সকালে যাব ।” “উহু, আজকেই যে ও । এখখুনি নয়, খানিক পরেই যেও কথাটথা বলে । যেও কিন্তু, হঁ্যা । ভারি দরকার। — বাবু বললেন, চিন্তামণি, গৌরকে সন্দের পর আসতে বোলো, ভারি দরকার।’ চিন্তামণি চলে যাবার পর তাড়াতাড়ি কথা শেষ করে গৌর রঘুকে প্রশ্ন করল, “কি করিব বল দিকি এবার ? “কি করবে ? তাই তো বটে। মুস্কিল হল ।” ভেবেচিন্তে পরামর্শ একটা রঘু দিল, গৌরের সেটা পছন্দ হল না। মামলা যখন ঠুকেই দিয়েছে তখন মামলা চলুক, একি একটা পরামর্শ হল! মামলা করার, সাক্ষী দেওয়ার অভ্যাস রঘুর, সে কি বুঝবে প্রথম উত্তেজনা কেটে ফাবার পর ফাদে পড়া জন্তুর মত এখন কি হচ্ছে গৌরের মধ্যে ! কিন্তু না, দুৰ্গা রঘুকে কাবু করে বোকা বানিয়ে দেয়নি। “আপোষ ? তুই বড় বোকা গৌরী ! মামলা হলে কি আপোষ হয় না ? আগে আপোষের চেষ্টা যখন করিাসনি, এখন চুপ করে থাক। সমান পেলে চাদ মাইতি নিজে আসবে নয়তো তোকে ডেকে পাঠাবে। তখন আপোষের কথা হবে ।” বিরজা উচ্ছসিত হয়ে উঠল, ‘ওকে তুমি কি শেখাবে ? সাঁতরাদের ও সাতঘাটের জল খাইয়েছে।” প্ৰশংসায় খুশী হওয়ায় রঘুর মুখে হাসি ফুটল। হাত বাড়িয়ে বিরজার বুক থেকে সে মেয়েটাকে টেনে নিল নিজের কোলে ৷ মেয়েটা মাই টানছিল বিরজার, মুখ থেকে মাইটা ছেড়ে যাবার সময় একটা শব্দ হল অদ্ভুত, যুবক-যুবতীর সাবেগ ও