পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9 মানিক গ্ৰন্থাবলী আকাশে মাটিতে খনিগহবরে সমুদ্রে। নিশ্বাসে সে স্বাদ পায় বাতাসের। পথের স্পর্শ তার লাগে অন্য রকম। গায়ের সেই সভায় যেন থেমে গিয়ে ছিল তার মনের গতি, তারপর থেকে এত দিন যেন সে বাস করছিল সেই সভার দিনটি পর্যন্ত সীমা টেনে দেওয়া পুরানো পরিবর্তনহীন জীবনে, পীড়ন পেষণ মৃত্যু দুর্নীতি হতাশার অভিশাপের মধ্যে। কিন্তু বদলে গেছে, - সব বদলে গেছে। ভেঁাতা। অন্ধকার হৃদয়ে পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে নতুন চেতনাস্পন্দন। জোয়ার ঢুকেছে। এদে ডোবায় । ক্ষতচিহ্নটা কি মিলিয়ে গেছে। চিনচিনা করছে না যেন আর । মনে দাগ কেটে কেটে লেখা প্রশ্নটা হয়ে গেছে ঝাপসা, অকারণ । কেন যে এত ক্ষোভ, এত অসন্তোষ জাগিয়ে রেখেছিল সে একদিন একজনের অন্যায় করার নিয়মেরও ব্যভিচারে । ওরকম হয়। ওটা সৃষ্টিছাড়া কিছু ছিল না, সে যেমন ভাবত । জগতে যে এক করে দেখে নিজেকে, জীবনে কোন অন্যায় না করেও সেই পারে আত্মহত্যা করতে, অন্যায়ের আত্মগ্নানিতে সেই হতে পারে হিংস্র ক্ষ্যাপা পশু । পিছন থেকে অনায়াসে মানুষকে ছুরি মারে যে গুণ্ডা। সে শুধু গুণ্ডাই থাকে যতদিন না পর হয়ে যায়। তার অন্য সব গুণ্ডারা, একেবারে এক না হয়ে যায়, - তখন সে হয় বিকারেরও ব্যভিচার, শয়তান মানুষ থেকে আসল শয়তান ! “আবদুল, এবার কিছু ঘটবে।” “कि शांbहद ?' “জবর কিছু। দেখছিসনা ছটফট করছে ?” গুলির আওয়াজের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রাসুলের ডান হাতটা যেন খেয়াল খুলীতেই আচমকা ছিটকে লাফিয়ে উঠে অসাড় হয়ে পড়ে যায়। আবদুল বলে, “কোথায় লাগল দেখি ? ‘ফাটা কপাল কি না, ডান হাতটাতেই লেগেছে।’ দু'জনেরই পরনে পাজামা । একটি ছেলে তাড়াতাড়ি কেঁচার কাপড় খুলে খানিকটা ছিড়ে নেয়, পকেটের রুমালটা দল পাকিয়ে ক্ষতমুখে চেপে বসিয়ে জোরে কাপড় জড়িয়ে বাধতে থাকে । রসুল বলে চলে, “বঁ হাতে সব হয়তো আবার অভ্যাস করতে হবে। সাইকেল চালিয়ে কলেজে যেতে অসুবিধে হবে না এক হাতে কিন্তু-” আজকেই শেষ, অক্ষয় ভাবে, আজ একটু খেয়ে শেষ করে দেবে। জীবনে