পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုကျိရ তবু ইতস্ততঃ করে রম্ভ —“কি লাভ হবে বলুন ? এ কথাটা বুঝিয়ে দেবেন, ওরা আরেকটা কথা ভাববে! একটা লাগসই কারণ তো থাকা চাই আপনার এখানে আসার ? মিছিমিছি। এমন কেউ আসে ?” “কারণ তো বলেছি। সবাইকে ?” “ওটা সবাই ঠিক ধরতে পারছে না।” মমতা স্তম্ভিত হয়ে যায়। এত করে বুঝিয়ে দেবার পরেও তার এখানে আসার সহজ সরল সঙ্গত ও মহান কারণটা সবাই ধরতে পারছে না !! খাপছাড়া উদ্ভট কারণ আবিষ্কারের প্রয়োজন হচ্ছে এখানে তার আবির্ভাবকে স্বীকার করতে! “তুমিও বোধ হয় পারিছ না ধরতে ? “তা নয়, মানে আর কি, ঠিক বুঝতে পারছি না।” খানিক গুম হয়ে থেকে মমতা বলল, “ডাকো তো সবাইকে ।” নিজেকে ব্যাখ্যা করে সুদীর্ঘ বক্তৃতা দিল মমতা। তাদের জন্য সে স্বামী ছেড়েছে, স্বামীর ঘর ছেড়েছে, বাড়ী ছেড়েছে, আত্মীয় বন্ধু সবাইকে ছেড়েছে, তাদের সঙ্গে সে যে এক হয়ে যেতে চায় এবং কেন চায়, সমস্তই সে বিশদভাবে বুঝিয়ে দিল সকলকে। তবু, এমন হী করে তাকিয়ে থেকেই সবাই শুনল কথাগুলি যে তারা বুঝল কি বুঝল না। এ বিষয়ে বেশ একটু খটকা রয়ে গেল। মমতার মনে । তারপর রম্ভার রান্নাঘরে গিয়ে মমতার মনটা হেঁচট খেল নোংরামিতে । ব্যথায় কনকনিয়ে উঠল মনটা। এসব বাড়ীতে সে এসেছে অনেকবার কিন্তু কারো রান্নাঘরে ঢেকে নি কোনদিন । প্ৰথমে মনে হল, ধোয়ার কালচে মারা সেঁতসেঁতে নিরন্ত্র সঙ্কীর্ণতাটাই বুঝি চরম নোংরামি। তারপর চােখে পড়ল। চলটা তোলা এবড়ো-খেবড়ো মেঝে, শীতকালে পথে পড়া ভিখিরির চামড়ার মত দেয়ালের ফাটল ধরা ফোড় ওঠা গোবর-মাটির চােলক, ধূলো তেল কালি ল্যাপিটানো হাঁড়ি কলসী, তেলমসলার পাত্র রাখার আধ হাত উচু বেদী, জল বেরোবার নালা, ভাতের হাঁড়ি, তরকারীর ঝাড়ি, কয়লা রাখার ভাঙা কড়াই, মাকড়সা, টিকটিকি, আসোলা । রম্ভ কথা কয় । মমতা ঠিায় বসে থাকে পিড়িতে । ক্রমে ক্ৰমে তার চোখে ধরা পড়ে, রীতিমত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে রান্নাঘরটি, যতটা সাধ্য ও সম্ভব SR