পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী কৃষ্ণেন্দুর ধারে কাছে ভিড়তে চায় না। যাবার সময় হঠাৎ সে আজ কৃষ্ণেন্দুর দু’পা ছুয়ে প্ৰণাম করে বসল। তার মনের বাষ্প তখনো উপে যায় নি। “এ আবার কি ?” “কিছু না মেজোবাবু।” “তুমি একটি আস্ত উল্লক, নরেশ । ওসব ভক্তি টক্তি আমার কাছে চলবে 'उांख्वि न ।।” তখন নরম হয়ে কৃষ্ণেন্দু জিজ্ঞেস করল, “কোথায় ছিলি এতদিন ? নরেশ ঢোক গিলে বলল, “হেথায় হোথায় ছিলাম। আমাকে ঝুমুরিয়া লেবেন সাথে ? আমিও একচেটি লড়ব মেজোবাবু।” “কার সাথে লড়বি ? ‘হেরম্ববাবুর সাথে।” কৃষ্ণেন্দু মৃদু হেসে হীরেনকে বলল, “হুকুম দিলে ও এখন হারাকিরি পর্যন্ত করতে পারে হীরেন।” হীরেন। মাথা নেড়ে বলল, “আমার সন্দেহ আছে। ছুরিটা পেটে ঠেকাতে পারবে, তারপর কি করবে বলা কঠিন। আমি ভাবছি। রামপালের কথা । লোকটা এমন অপদার্থ জানতাম না ।” ‘ওরা সবাই এরকম। কত চেষ্টায় ওদের কাছে কতটুকু সাড়া পাই জানলে চোখে তোর জল আসত। চেহারা দেখে মনে হয় রামপালের মধ্যে বুঝি কিছু আছে, অন্ততঃ থাকা উচিত, ওর সম্বন্ধে তাই বেশী হতাশা জাগে । নয়তো আর দশজনের চেয়ে বেশী অপদার্থ লোকটা নয় ।” দাওয়া থেকে নামবার আগে দু’জনেই মুখ ফিরিয়ে একবার ঘরের মধ্যে তাকাল । রামপাল শুয়ে পড়েছে। গানের মত মিহি সুরে রম্ভ আবার শোক শুরু করেছে। নরেশের আবেদনের জবাব দিতে ভুলে গিয়ে হীরেনের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দু চলে গেল । ঘণ্টা দুই পরে রামপালের ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঠেলে ঠেলে তাকে জাগিয়েছে রস্তা। জাগিয়েই একটু তফাতে সরে গিয়ে সে বিনিয়ে বিনিয়ে কান্না শুরু করে দিল । একবার সে রামপালের বুকে আসতে চায়, একটু সহানুভূতি চায় তার কাছে। SVb7