পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

rR R a বলে, ধান ? চোরাই ধান ধরা পড়েছে ? তাই নাকি! তা এত ভিড় ८क्न ? বলে, কি হে পরাণ, ব্যাপারটা কি ? আমি কি জানি, নারায়ণ বলে, কর্তা ধান পাঠালআচ্ছা, আচ্ছা, সে হবে। শুনছি সব। প্রায় ধমক দিয়ে বলে বিধুভুষণ, লোকটার মূর্থিতায় সে চটে যায়! কর্তাকে আবার টানবার চেষ্টা কেন এর মধ্যে ? বিধুভুষণ যেন জানে না কে তার কর্তা, কে ধান পাঠিয়েছে! সুধীর কানাইদের বলে বিধুভুষণ, ওহে তোমরা ভিড় ভাগাও, তোমরাও যাও। ধরিয়ে দিয়েছে, এবার যা করার আমায় করতে দাও । সুধীর কানাইরা নড়ে না। ভিড় এক পা পিছু হটে না। সুধীর বলে, সবার সামনে ধান দেখুন, সাক্ষীদের নাম-টাম লিখুনব্যাটাকে গারদে পুরুন। —একজন চেচিয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে একটা সিগারেট ধরায় বিধুভুষণ, সুধীরদের দিকে, পিছনের জনতার দিকে দু’চারবার তাকায়, তারপর নারায়ণকে বলে, গুদামটা খোলো ত হে । কত ধান আছে ? দরজা খুলে একবার উকি দিয়ে দেখেই বাইরে থেকে তালা এটে সিল করে দেওয়া হয়, লেখালেখি হয় বিবরণাদি সাক্ষীর নাম ধাম, তারপর একজন পুলিসকে গুদামের সামনে মোতায়েন রেখে নারায়ণকে নিয়ে বিধুভুষণ চলে যায়! ভিড়ের মানুষ তৃপ্ত হয়ে বাড়ি ফেরে। সেইদিন জগৎ কুণ্ডু যায় সদরে, হাজিরা দেয় জোনসের বাংলোয়। জোনস একা থাকে, তার মেম থাকে। কলকাতায় । শহর ছেড়ে সে নড়ে না, টাকা চেয়ে পাগল করে তোলে জোনসকে। না দিয়ে উপায় থাকে না, বড় মুশকিল হয় টাকার ব্যাপারে কডাকড়ি করলে । পরদিন দেখা যায় কেরোসিন তেলের দোকানের সামনে চেয়ারে বসে ঝিমোচ্ছে নারায়ণ । পুলিসের তত্ত্বাবধানে গুদামের ধানগুলি থানার কাছে এক চালা-ঘরে চালান হয়ে যায়, সেঁতসেঁতে মাটির মেঝেতে জমা হয়। খড়ের চালার অনেকগুলি ফোকর দিয়ে ঘরের মধ্যে উকি মারে মেঘমান আকাশের আলো । সুধীর কানাইরা কয়েকজন দেখা করতে যায় বিধুভুষণের সঙ্গে, জিজ্ঞাসা করে, কি ব্যাপার হল ? o স্ব-নিৰ্বাচিত গল্প ও