পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3SRt ছেলেকে। মদনের ওপর মাসীর বিশ্বাস খাটি । রামায়ণ সে পড়তে পারে সুর করে, তঁতের কাজে বাপের নাম সে বজায় রেখেছে, সেরা জিনিস তৈরির বায়না পায় মদন তাতী । মদনের মার সঙ্গে কচি বয়সে এ বাড়িতে এসে মাসী শুনেছিল, বাবুদের বাপের আমলে বেনারসী বুনে দেবার বায়না পেয়েছিল মদনের বাপ। বিয়ের সময় জালের মত ছিষ্টেছাড়া শাড়ি বুনে পরতে দিয়ে তার সঙ্গে যে মস্কার করেছিল মদনের বাপ সে কথা কোনোদিন ভুলবে না। মাসী। আজ আকাল, বায়ন আসে না, সুতো মেলে না, তাত চলে না, তবু মদন ওঁচা কাপড় বোনে না। ওর জন্য কষ্ট হয় মাসীর, ওর বাপের কথা ভেবে। মা বেী যেন কেমন ব্যাভার করে ওর সঙ্গে । মদনের বাপ যদি আজ বেঁচে থাকত, মাসী ভাবে । বেঁচে থাকলে সাড়ে চার কুড়ির বেশী বয়স হত তার। মাসী তা ভাল বোঝে না। শুধু শ্ৰীধরের চেয়ে সে বেশী বুড়ো হয়ে পড়ত ভাবতে মনটা তার মুষড়ে যায়। শ্ৰীধর তঁাতীর বেঁচে থাকার দুর্ভাগ্য দেখে সে নিজেই যে কামনা করে, এবার বুড়োর যাওয়াই ভাল। না থাকে মদনের বাপ । মদন তা আছে! মদনের মা বৌ ফিরে আসে গুটিগুটি, পেটের ভারে মদনের বৌ থপথপ পা ফেলে হাটে, হাত পা তার ফুলছে। ক’দিন থেকে। পরনের জীর্ণ পুরনো শাড়িখানা মদন নিজে বুনে দিয়েছিল তাকে বিয়ের সময়। এখনো পাড়ের বৈচিত্র্য, মিহি বুননের কোমল খাপি, উজ্জ্বলতা, সব মিলে এমন সুন্দর আছে কাপড়খানা যে অতি বিশ্ৰীভাবে পরলেও রুক্ষ জট বঁধা চুল, চােকলা ওঠা ফাটা চামড়া, এসব চিহ্ন না থাকলে বাবুদের বাড়ির মেয়ে মনে করা যেত তাকে। মদনের মা বিড়বিড় করে বকতে বকতে আসছিল। লাঠি ধরে কুঁজো হয়ে, ভুবনের সামনে সে কিছু না বললেই মদন খুশী হত। কিন্তু বুড়ির কি সে কাণ্ডজ্ঞান আছে। সামনে এসেই সে শুরু করে দেয় মদন তাতীর এয়োতি বশীকরণ বন্ধুস্তশাড়ির বায়নার কথা শুনেই বাবুর বাড়ির মেয়েদের হাসি-টিটকারি দিয়ে তাদের বিদেয় করার কাহিনী । ওসব কাপড়ের চল আছে নাকি আর, ঠাকুম দিদিমারা ঝিরা আর চাষার ঘরের মেয়ের পরে ওসব শাড়ি। মদন তঁাতী ! মদন তাতীর কাপড় । বনগায় শু্যাল রাজা মদন তঁতী । বলল ? বলল ওসব কথা ? পা গুটিয়ে সিধে হয়ে বলে মদন, বেড়েছেবড় বেড়েছে বাবুরা। অতি বাড়ি হয়েছে বাবুদের, মরবে। এবার। ow-f(tfits o S (t