পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in অতসী মামি SSV) আলোটা তুলিয়া নিয়া কেতকীর হাত ধবিয়া অনন্ত সাবধানে ভাঙা সিঁড়ি দিয়া নীচে নামিল। দেউড়ির নীচে তিন-চারহাত লম্বা একটা কালো মোটা সাপ শূইয়াছিল, আলো চোখে পড়িতে আধহাত উচু ফণা তুলিয়া স্থির হইয়া রহিল। দুজনে থমকিযা দাডাইয়া পড়িল। কেতকী ফিসফিস করিয়া বলিল, নড়ো না, আলো নেড়ো না। ছুটে এসে ছোবল দেবে। অনন্ত নডিল না, আলোও নড়িল না, মৃদুস্বরে বলিল, এই ভদ্রলোকটির সন্ধানেই চারিদিকে চঞ্চলভাবে তাকাচ্ছিলে বুঝি ? আমি ভাবছিলাম মন্দির থেকে নেমে এসেও তোমার ভয় কমেনি। কতক্ষণ পুতুল হযে দাঁড়িযে থাকলে উনি পথ দেবেন? দু-এক মিনিট। অভিজ্ঞতা আছে দেখছি। এ বাড়ির এই সব বিপদও কি তিনবছর ধরে তোমায় এড়িয়ে চলেছে ? কেতকী মৃদু হাসিল, সাপ আর বিপদ কী!! সাপ যে বিপদ নয়। সঙ্গে সঙ্গেই সে প্রমাণ পাওযা গেল। কেতকীর দুই হাতের মধ্য দিয়া অমনি মোটা আর একটি সাপ মন্থর গতিতে দেউড়ির তলে সঙগীর কাছে আগাইয়া গেল। কেতকী বলিল, ওব বউ। ভাবী শান্ত। তা দেখতেই •। কিছু ! এখানকার যমরাজাও ভাবী শান্ত। স্বামীর গায়ের উপৰ দিয়ে পিছলাইয়া গিযা শান্ত সাপবধু একটা ইটেব ওপে ঢুকিয়া পড়িল। ফণা নামাইযা স্বামীটিও তাঁহাকে অনুসরণ করিল। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে পুনর্মিলন বেচারির অদৃষ্ট ছিল না। ইটের স্তপোব কাছে পৌছবার পূর্বেই একটা আস্ত ইস্ট কুডইয়া নিয়া অনন্ত সামনে আগাইয়া গেল এবং সাপের মাথা লক্ষ করিষা সজোরে ইটটা घूं७िभा मादिद । শিহবিয কেতকী অস্ফুট আর্তনাদ করি যা উঠিল, এ কী কবলে ? অনন্তর তখন কথা কহিবার সময় ছিল না। ইটের আঘাতে ফণার খানিক নীচে মেরুদণ্ড ভাঙিয়া যাওযায় সাপটা ওলট-পালট খাইতেছিল, একটির পর একটি ইট তুলিয়া অনন্ত ষ্টুড়িয়া মারিতে লাগিল। সাপের ফণা ছেচিযা গেল, রক্তাক্ত দেহটা একবার দড়ির মতো পাকাইয়া গিয়া আর নড়িল না, লেজেব দিকটা শুধু এদিক ওদিক আন্দোলিত হইতে লাগিল। অনন্ত হাত ঝাড়িয়া বলিল, যাক। এবার ওর শান্ত বউটী বাকি রইল। কেতকী ধবা গলায় বলিল, কেন মারলে ? সাপ মারতে হয কেতকী। বেঁচে থাকতে হলে ভাঙা বাডির সংস্কার করার মতো এও অপরিহার্য কর্তব্য । তাই বলে ইট দিয়ে কেউ অত বড়ো সাপ মারে! যদি না লাগত ? চোখের পলকে তাহলে— কেতকী শিহরিয়া উঠিল। অনন্ত হাসিয়া বলিল, সাপটা মরে গেছে, না লাগার কথা এখন আবি ওঠে না। কিন্তু প্ৰথমবােব তুমি যে 'এ কী করলে’ বলে চেচিয়ে উঠলে সে তো আমার বিপদের কথা ভেবে নয় ? কেতকী বলিল, ওঁর নিষেধ ছিল। একজন চাকর একবার এতটুকু একটা বাচ্চা সাপ মেরেছিল, চাবাঁকিয়ে উনি তার পিঠের কিছু রাখেননি। আজও বোধ হয় বেচারির পিঠেব দাগ আছে। ওঁর মতে,-- মা কালীর ডাকিনী-যোগিনীরা এ বাড়িতে সাপ হয়ে আছে-মারলে মহাপাপ হয়, অকল্যাণ হয়, সর্বনাশ হয়। অনন্ত শান্তভাবে বলিল, আমিও এই রকম কিছু অনুমান করেছিলাম কেতকী। সেই জনোই (V5 aJéGa মানিক ১ম-১৩