পাতা:মায়াবাঁশী - রবীন্দ্রনাথ মিত্র.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মায়াবাঁশী
৩৮

পাহাড় হয়ে রাস্তার ধারে পড়ে গেল। বৃষ্টি থামল, সৃষ্টি বাঁচল।

 পাহাড় হয়ে কুলী ভাবল, “এই ঠিক, এই আমার বেশ হয়েছে। কত বাঘ ভালুক—যাদের দেখলে বড় বড় জোয়ান আঁৎকে উঠে—তারা বুকের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন পিঁপড়ে। আমার মত বীর কে?” কুলী খুলী হয়ে কিছু দিন রইল। এই রকমে দিন যায়। কুলী নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

 এমন সময় সহরে নতুন রাস্তা তৈরী হবে। মিকাডো রাজ্যের যত পাথর ভাঙ্গতে হুকুম দিলেন। লাখ কুলী শাবল আর হাতুড়ী দিয়ে যত পাহাড় ভাঙ্গতে সুরু করে দিল। হঠাৎ কুলীর ঘুম ভেঙ্গে গেল। পায়ে যেন কে খোঁচাচ্ছে। চোখ মেলে দেখে তারই আগেকার চেহারার মত এক কুলী বিড়ি টানতে টানতে হাতুড়ী দিয়ে তাকেই ভাঙ্গছে। কুলী চটে লাল হয়ে গেল। আমাকে ভাঙ্গে! কিন্তু করবেন কি? হাত-পা নাড়বার যো নাই। হাতুড়ী পড়ছে খট্‌ খট্‌। নাঃ—আর না—এর চেয়ে কুলী হওয়াই ভাল। তা হ’লে শাবল দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে—অমনি দেবদূত অট্টহাস্য করে বললেন, “তাই হোক! ঘুরে ফিরে তাই হও, সেই তোমার ভাল। কিছুতে যার সন্তোষ নেই, তার উন্নতি কোন মতে