পাতা:মালিনী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পারলুম না। পালিত-সাহেবকে মনের ক্রিয়ার এই বিস্ময়কীরতা জানিয়েছিলুম। তিনি এটাতে বিশেষ কোনো ঔৎসুক্য বোধ করলেন না। কিন্তু অনেক কাল এই স্বপ্ন আমার জাগ্ৰত মনের মধ্যে সঞ্চরণ করেছে। অবশেষে অনেক দিন পরে এই স্বপ্নের স্মৃতি নাটকার আকার নিয়ে শান্ত হল । বোধ করি এই নাটকায় আমার রচনার একটা-কিছু বিশেষত্ব ছিল, সেটা অনুভব করেছিলুম। যখন দ্বিতীয় বার ইংলণ্ডে বাসকালে এর ইংরেজি অনুবাদ কোনাে ইংরেজ বন্ধুর চােখে পড়ল। প্রথম দেখা গেল এটা আর্টিস্ট রোটেনস্টাইনের মনকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে। কখনো কখনো এটাকে তঁর ঘরে অভিনয় করবার ইচ্ছেও তার হয়েছিল । আমার মনে হল এই নাটকের প্রধান চরিত্রগুলি তার শিল্পী-মনে মূর্তিরূপে স্পষ্ট –হয়ে উঠেছে। তার পরে এক দিন ট্ৰেভেলিয়ানের মুখে এর সম্বন্ধে মন্তব্য শুনলুম। তিনি কবি এবং গ্রীক সাহিত্যের রসজ্ঞ। তিনি আমাকে বললেন এই নাটকে তিনি গ্ৰীক নাট্যকলার প্রতিরূপ দেখেছেন। তার অর্থ কী তা আমি সম্পূর্ণ বুঝতে পারি নি, কারণ যদিও কিছু কিছু তর্জমা পড়েছি। তবু গ্ৰীক নাট্য আমার অভিজ্ঞতার বাইরে। শেক্সপীয়ারের নাটক আমাদের কাছে বরাবর নাটকের আদর্শ। তার বহুশাখায়িত বৈচিত্ৰ্য ব্যাপ্তি ও ঘাত-প্ৰতিঘাত প্ৰথম থেকেই আমাদের মনকে অধিকার করেছে। মালিনীর নাট্যরূপ সংযত সংহত এবং দেশকালের ধারায় অবিচ্ছিন্ন। এর বাহিরের রূপায়ণ সম্বন্ধে যে মত শুনেছিলুম এ হচ্ছে তাই। কবিতার মর্মকথাটি প্ৰথম থেকেই যদি রচনার মধ্যে জেনেশুনে বপন করা না হয়ে থাকে তবে কবির কাছেও সেটা প্ৰত্যক্ষ হয়ে উঠতে দেরি লাগে । আজ আমি জানি মালিনীর মধ্যে কী কথাটি লিখতে লিখতে উদ্ভাবিত হয়ে V