পাতা:মাসিক মোহাম্মদী (প্রথম বর্ষ).pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ, ১৩৩৪ সাল ] ধৰ্ম্মের খাতিরে কেহ আর সেগুলিকে মান্য করিয়া চলে না । কাজেই, কোরআন হাদিছ স্ত্রীবর্জনেরও একাধিক স্ত্রীগ্রহণের যে সকল শৰ্ত্ত নিৰ্দ্ধারিত করিয়া দিয়াছে, তাহাকেও আইনে পরিণত করিতে হইবে। এই আইনের ফলে, দরখাস্তকারীকে প্ৰমাণ করিতে হইবে যে, বস্তুতঃ শরিয়তের নিয়ম কানুন অনুসারে সে স্ত্রীবর্জনের বা একাধিক স্ত্রীগ্রহণের অধিকারী । অন্যথায় তাহ আইন-গ্ৰাহ হইবে না। বরং অবস্থা বিশেষে পুরুষকে দেশের ফৌজদারী দণ্ডবিধি আইনের বিধান অনুসারে অর্থদণ্ডে বা কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইতে হইবে। অবস্থান্তরের সঙ্গে সঙ্গে, মানুষকে এছলাম প্ৰদত্ত অধিকার ভোগ করিতে দেওয়ার পূর্বে, তৎসংক্রান্ত অপরিহাৰ্য্য বিধি ব্যবস্থা ও শর্তগুলি মানিয়া চলিতে বাধ্য করার জন্য, মোছলেম জগতের প্রত্যেক আবশ্যকীয় কেন্দ্ৰে এই শ্রেণীর আইন কানুন প্ৰণীত হইতে আরম্ভ হইয়াছে। কারণ, ঐ সকল অনুমতির সহিত এই শর্তগুলির অবিচ্ছেদ্য যৌগপতিক সম্বন্ধ। পূর্বকার মুছলমানগণ স্বাভাবিক ধৰ্ম্মভীরুতা ও পরহেজগারীর জন্য নিজেরাই ঐ সকল শাস্ত্রোক্ত শৰ্ত্ত মান্য করিয়া চলিতেনকেহ না মানিলে কাজী মুফতী প্ৰভৃতি খলিফার প্রতিনিধিগণের নিকট তাহার প্রতিকারের দাবী করা চলিত । কিন্তু আজকাল বিশেষতঃ আমাদিগের দেশে, সমস্ত শৰ্ত্ত ও সমস্ত নিয়ম লোপ পাইয়াছে।--আছে কেবল স্ত্রী-বর্জনের অধিকার, আছে কেবল একাধিক স্ত্রী-গ্ৰহণের অনুমতি । আজকাল অনেক মুছলমান ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হওয়ার জন্য বহু অর্থ ও শ্রমের সদ্ব্যয় বা অপব্যয় করিয়া থাকেন। তাহাদিগের মধ্যে কেহ কি মিসরের অনুকরণে বিবাহ-সংক্রান্ত আইনের সংস্কার-সাধনের চেষ্টা করিতে পারেন না ? কেহ এজন্য প্ৰস্তুত হইলে আমরা তঁহাকে যথাসাধ্য সাহায্য করিতে হাজির আছি। ইহার জন্য ঘোর আন্দোলন উপস্থিত করার আবশ্যক হইয়া দাড়াইয়াছে। মোছলেম লীগ, জমইয়াতে ওলামা ও অন্যান্য মোছলেম প্ৰতিষ্ঠানগুলিকে এদিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে অনুরোধ এজলামেন নাৰীৱন সমমৰ্য্যাদা ও অধিকাৱ লোকের / sở LELSL LLLLAeA eLLeLSELSLLLSLLLL LLASLL LEL L LLLLL LLL LLLLAAAAS LLLSAALLS করিতেছি। আমরা একটা নূতন কাণ্ড-কারখানা উপস্থিত করিতে বলিতেছি না । আমরা বলিতেছি।-কোরআন ও হাদিছ। স্ত্রী-বর্জন ও একাধিক স্ত্রীগ্রহণকে, যে নিয়ম কানুন ও শীৰ্ত্তাদির সহিত অবিচ্ছেদ্যরূপে সংশ্লিষ্ট করিয়া দিয়াছে, মুছলমান আইনে দুই তিনটা ধারা যোগ করিয়া সেগুলিকেও আইনে পরিণত করিয়া দিতে। জানিনা, এই দুর্বল কণ্ঠের ক্ষীণ আৰ্ত্তনাদ মুছলমান সমাজে কোন প্ৰতিধ্বনি জাগাইয়া তুলিতে পরিবে কি না ? নারীর অধিকার সম্বন্ধে আলোচনা করিতে হইলে ভারতীয় মুছলমান সমাজের—সমাজের শরিফ ও পরহেজগার লোকদিগের—মধ্যে প্ৰচলিত বর্তমান অবরোধ-প্ৰথা সম্বন্ধে আলোচনা হওয়ারও বিশেষ আবশ্যক ছিল। কিন্তু স্বতন্ত্রভাবে ও বিস্তারিত রূপে ইহার আলোচনা হওয়া আবশ্যক মনে করিয়া, তাহাও এখন স্থগিত রাখিতেছি। আমাদিগের মতে, এই পর্দার অনুকূলে কোনও দলিল নাই,--বরং কোরআন, হাদিছ, খাইরুল কোরুন বা স্বর্ণযুগের ইতিহাস, সমগ্ৰ মোছলেম জগতের অতীত ও বৰ্ত্তমান আচার, একবাক্যে ইহার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতেছে। এই প্ৰবন্ধে যে ক-একটা হাদিছ বাণিত হইয়াছে, তাহাতেও পাঠকগণ প্ৰকৃত অবস্থার কতকটা সন্ধান পাইতে পরিবেন। প্ৰবন্ধের উপসংহার ভাগেও তাহারা ইতস্ততঃ, বৰ্ত্তমান অবরোধ-প্রথার বঙ্ক । প্রতিকূল নজির দেখিতে পাইবেন। তবে এখানে পাঠকগণকে ইহাও স্মরণ রাখিতে হইবে যে, এছলাম। যেমন ভারতীয় মুছলমানদিগের মধ্যে প্রচলিত বৰ্ত্তমান অবরোধ-প্রথার সমর্থন করেন-ঠিক সেইরূপ, ইউরোপের বীভৎস সভ্যতার বৰ্ত্তমান স্বরূপের এবং সমস্ত সুনীতি ও শ্লীলতার বিপরীত তাহার এই নারকীয় নগ্ননৰ্ত্তনের সমর্থনও এছলামে নাই। এছলামে স্বাধীনতা আছে—উচ্চ স্থলতার প্রশ্ৰয় নাই, অধিকারআছে—ব্যভিচার নাই, নারীর মুক্তি আছে-মুক্তির নামে বুভূক্ষু কামকুকুরগণের নীচ স্বাৰ্থ প্রণোদিত প্রচ্ছন্ম বিলাসবৃত্তির পৈশাচিক পিপাসা নাই।