পাতা:মাসিক মোহাম্মদী (প্রথম বর্ষ).pdf/৫৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অলৌকিক আত্মত্যাগ [ আবদুল কাদের ] de Sumano ১৭৬০ খৃষ্টাব্দে ইংরেজের কৃপায় বিশ্বাসঘাতক মীর জাফরের শাসনকালের অবসান ঘটিলে তদীয় জামাতা নবাব নাসির-উল-মুলক ইমতিয়াজ উদ্দৌলা মীর মোহাম্মদ কাসেম আলি খা নসরৎ জঙ্গ বাহাদুর বঙ্গ বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসনে আরোহণ করিলেন। মীর কাসেম দেখিলেন, রাজ-কোষ অর্থশূন্য। অথচ অর্থ বলে বলীয়ান না হইলে হৃদয়-নিহিত মহান আশা সফল করিবার কোনই সম্ভাবনা নাই। তজ্জন্য তিনি সিংহাসনে আরোহণ করিবার পর সর্বপ্রথম ধনাগমের উপায়-উদ্ভাবনে সচেষ্ট হইলেন। বহু বৎসর পূর্বে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব সিরীয়-রাজ নুরুদ্দীন, পাঠান-রাজ নাসীর উদ্দীন, মিসর-সম্রাট সালাহুদিন প্ৰভৃতি মোসেলেম নরপতিগণ বিশাল সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হইয়াও বিলাসিতাকে চিরতরে বিসৰ্জন দিয়া বিশ্ব-জগতে রাজর্ষি নামে পরিকীৰ্ত্তিত হইয়াছিলেন। প্ৰজাবৎসল স্বাধীনচেতা নবাব মীর কাসেমও রাজন্যগণের দৃষ্টান্তের অনুসরণ করিলেন। তাহার কঠোর আদেশে রাজ-পুরী হইতে গীতবাদ্য অন্তহিত হইল, অনাবশ্যক দাস দাসী বিদায় গ্ৰহণ করিল-বিলাসিতার যাবতীয় উপকরণ একে একে দূরীভূত হইল। প্ৰজার উপকারের জন্য, স্বজাতির সম্মান রক্ষার জন্য ও সর্বোপরি স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মীর কাসেম ভোগ-বিলাস পরিত্যাগ করিয়া আড়ম্বরহীন “দরবেশ” জীবন যাপন করিতে লাগিলেন ৷ রাজ্যে তখন ভীষণ অশান্তি। ইংরেজ তখন পূৰ্ব্ব-ভারতে সর্বে-সৰ্ব্ব । রাজ-কৰ্ম্মচারীগণের শাসন এবং নবাবের ক্ৰকুটী অগ্ৰাহ করিয়া কুটিল-হৃদয় স্বার্থাদ্ধ ইং রজ বণিক রাজ্যের সকল স্থানে বিনাশুন্ধে বাণিজ্য করিয়া বেড়াইতেছিল। দেশের যাবতীয় ধন-সম্পদ বাণিজ্য-লক্ষ্মীর রূপায় Und র্তাহার পূর্ববৰ্ত্তী । ইংরেজের করতলগত হইতেছিল। ইংরাজেরা বিনাশুক্ষে বাণিজ্য করিত ; দেশীয় বণিকদিগকে শুল্ক দিতে হইত। সুতরাং প্ৰতিযোগিতায় দেশীয় বাণিজ্য টিকিতে পারিল না । ধনহীন হইয়া স্বর্ণ-প্ৰসূ বঙ্গ-ভূমি উৎসন্ন যাইতে বসিলা। যে সকল দেশীয় বণিক, জমিদার ও অধিবাসী স্বদেশের সৰ্ব্বনাশে ব্যথিত হইয়া ইংরাজ বণিকের অবাধ বাণিজ্যে ব্যাঘাত জন্মাইবার চেষ্টা করিল, তাহারা খৃষ্টান সৈন্যগণের DBD BDBDDBD BBBBD DBD DBD DBBDD DBBD চির-তরে অপসৃত হইতে লাগিল। ইংরাজের অত্যাচারে দেশে হাহাকার উঠিল। কোটী কণ্ঠের করুণ আৰ্ত্তনাদে বঙ্গ বিহার উড়িষ্যার গগন-পবন মুখরিত হইয়া উঠিল। মীর কাসেম ইংরাজ বণিক-সভার নিকট অভিযোগ উত্থাপন করিয়া এবং কোম্পানির কৰ্ম্মচারিগণের বাণিজ্যের শুল্কহার নিৰ্দ্ধিারিত করিয়া দিয়া প্রজাবর্গের দুরবস্থার প্ৰতিকার সাধনে চেষ্টত হইলেন। কিন্তু তঁহার চেষ্টা ফলবতী হইল না। অগত্যা তিনি বাণিজ্য-শুস্ক একেবারে রহিত করিয়া দিলেন। ইহাতে ইংরেজের স্বার্থে আঘাত পড়িল। দেশীয় বাণিজ্যের সর্বনাশী-সাধনই তাহদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল। মীর কাসেমের এই কাৰ্য্যে তাহাদের সে-উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইল। তাহারা বাহুবলে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য যুদ্ধযাত্ৰা করিল। মহাবীর মীর কাসেম ও নির্ভয়-চিত্তে ইংরেজের অত্যাচার হইতে প্ৰজার ধন প্রাণ ও জন্মভূমির স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সসৈন্যে রণ-সাজে সজ্জিত হইলেন। বুদ্ধিমান মীর কাসেম দিব্যচক্ষে ভবিষ্যৎ-বিপদ দর্শন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। তাই জন্মভূমির স্বাধীনতা রক্ষার্থে তিনি ইংরাজের সহিত যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হওয়াই স্থির করিলেন। ইংরাজের পাশব অত্যাচার নিবারণ, প্ৰজাকুলের