পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 মা উঠে দাঁড়ালেন, এবার তাহলে আমরা যাই।

 শোফি বললো, হাঁ চলো।

 চাষীরা তাদের বিদায় দিলো—পরম আত্মীয়কে মানুষ যেমনভাবে বিদায় দেয়।

 পথে আস্‌তে আস্‌তে মা বললেন···এ যেন একটা সুন্দর স্বপ্ন। মানুষ আজ সত্য জানবার জন্য উন্মুখ।...উৎসবের দিন, প্রত্যুষে দেখেছি মন্দির জনহীন অন্ধকার···ধীরে ধীরে সূর্যও ওঠে, আলো জাগে, নরনারী সম্মিলিত হয়! এও তেমনি আমাদের প্রত্যুষ—

 শোফি বললো, হাঁ, আর আমাদের মন্দির এই সমগ্র পৃথিবী।


—পাঁচ—

 এমনি বিচিত্র গতিতে ব’য়ে চললো মা’র জীবন-স্রোত। শোফিও টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে দেশময়—দু’দিন থাকে, তারপর কোথায় উধাও হ’য়ে যায়, কেউ টের পায় না, তারপর আবার অকস্মাৎ এসে হাজির হয়। আইভানোভিচ রোজ ভোর আটটায় চা খেয়ে মাকে খবরের কাগজ পড়ে শোনায়, তারপর ন’টায় আফিসে চলে যায়। মা ঘরের কাজ করেন, বই পড়তে শেখেন। আর ছবির বইয়ের দিকে মনসংযোগ করেন —ছবি দেখতে ভারি ভালো লাগে তাঁর—সমস্ত দুনিয়ার সমস্ত কিছু জিনিস তাঁর চোখের সামনে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। তারপর চলে তাঁর প্রধান কাজ—নিষিদ্ধ পুস্তক এবং ইস্তাহার ছড়ানো। নানা ছদ্মবেশে, নানা স্থানে, নানারকম লোকের সঙ্গে তিনি চলেন, ফেরেন, গল্প করেন, মনের কথা কৌশলে বার করেন। গোয়েন্দারা তাঁকে কোনোদিনও

১৪৮