পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

তাে টাকা দরকার···ছেলে প্রায় সব টাকাই তাে এনে মায়ের হাতে দেয়।······

 এমনি করে দু’ বছর কাট্‌ল।

 একদিন সান্ধ্যভােজের পর পেভেল ঘরের এক কোনে ব’সে পড়ছে···মাথার ওপর কেরোসিনের ল্যাম্প ঝুলছে···রান্নাঘরের বাসন-পত্র মুক্ত ক’রে মা সন্তর্পণে ছেলের কাছে এসে দাঁড়ালেন। ছেলে মাথা তুলে নিঃশব্দে প্রশ্ন-ভরা দৃষ্টিতে মায়ের দিকে চাইলো।

 কিছু না পাশা! এমনি এলুম,—তাড়াতাড়ি চলে গেলেন মা এই কথা ব’লে, কিন্তু চোখে তাঁর উদ্বেগের সুস্পষ্ট ছাপ। এক মুহূর্ত রান্নাঘরে স্থির, চিন্তামগ্ন, অভিনিবিষ্টভাবে দাঁড়িয়ে থেকে হাতমুখ ধুয়ে ফেলে আবার ছেলের কাছে এলেন, বললেন মৃদু-কোমল সুরে, একটা কথা জিগ্যেস করতে চাই, বাবা, দিনরাত সব সময় কেবল পড়িস কেন?

 বইখানা একপাশে সরিয়ে রেখে পেভেল বললাে, মা, বােসো। মা ছেলের পাশে বসলেন···তাঁর দেহ ঋজু হ’য়ে উঠলাে, ভীষণ একটা-কিছু শােনার বেদনাময় উৎকণ্ঠায়। তাঁর দিকে না চেয়েই পেভেল ধীরে কিন্তু দৃঢ়তা-মাখানাে সুরে বলতে লাগলাে, আমি নিষিদ্ধ বই পড়ছি। এ বই নিষিদ্ধ—কারণ এতে মজুর-জীবনের খাঁটি ছবি আঁকা। এ বই ছাপা হয় গােপনে···আর আমার কাছে এ বই আছে, এ যদি প্রকাশ পায়, তাহলে আমার জেল হবে—আমার জেল হবে আমি সত্যি জানতে চাই এই অপরাধে।

 মার যেন নিঃশ্বাস রুদ্ধ হ’য়ে এলাে বড় বড় চোখ মেলে ছেলের

১৯