পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 তারপর মা আবেগের সঙ্গে বিপ্লব কাহিনী, নামজাদা বিপ্লবীদের জীবনী এবং কার্য-প্রণালী ও দেশ-বিদেশের মজুর-প্রগতির কথা চাষীদের কাছে বর্ণনা ক’রে গেলেন।

 তেতিয়ানা বললো, তাইতো আমি ওকথা বলি, মা। তারা আর আমরা! আমরা তো জীবন কাটাই ভেড়ার মতো। এইতো ধরুন, আমি লিখতে পড়তে জানি, বই পড়ি আর ভাবি,···এমনও অনেকদিন হয় যে ভাবনায় রাতে ঘুম হয় না?···কিন্তু লাভ? না ভাবলে জীবনটা ঠেকে ফাঁকা, আর ভাবলেও জীবনটাকে ফাঁকাই ঠেকে। পৃথিবীর কোনকিছুর যেন কোন উদ্দেশ্য নেই। এই যে চাষীরা···দিনরাত খেটে মরে এক টুকরো রুটির জন্য···কিন্তু কি পায়? কিছুই না। তাইতো দুঃখ পায়, রেগে ওঠে, মদ খায়, মারামারি করে, তারপর আবার কাজ করে। কাজ·· কাজ···কাজ·· কিন্তু কাজ করে লাভ?···বিন্দুমাত্র না।

 স্টিপান হঠাৎ বললো, তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আলোটা নিভিয়ে দেওয়া ভাল।

 পিওর বললো, হাঁ, সতর্ক থাকবে বৈকি, স্টিপান। কাগজ যখন ছড়িয়ে পড়বে লোকদের মধ্যে তখন···

 স্টিপান অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে মার দিকে চেয়ে বললো, কিন্তু আমি আমার কথা বলিনি।···আমার মতো মানুষের দামই বা কি! একশো এক আনা।

মা বললেন, ভুল করছো তুমি। বাইরের লোক···তোমায় শোষণ করায় যার স্বার্থ···সে তোমার যে দাম কষবে তা গ্রাহ্য নয়! তোমার, দাম কষবে তুমি নিজে।


 পিওর বিদায় নিয়ে চ’লে গেলো। তেতিয়ানা মাকে বিছানা পেতে

১৭৬