পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 বিস্মিত, মুগ্ধ শ্রোতৃমণ্ডলী আরো চেপে দাঁড়ালো মার দিকে। ভিড় ক্রমশ বাড়তে লাগলো। মা বলতে লাগলেন, দারিদ্র্য, অনশন, ব্যাধি··· শ্রম ক’রে গরীবের লাভ হয় এই। সমাজের এই ব্যবস্থা আমাদের ঠেলে দেয় চুরির দিকে, অন্যায়ের দিকে। আর আমাদের মাথার ওপর বসে আছে ধনীরা·· শান্তিতে এবং তৃপ্তিতে। যাতে আমরা তাদের বাধ্য থাকি তাই তাদেরই হাতে পুলিস, সরকার সৈন্য-সামন্ত সব-কিছু! সবাই আমাদের বিরুদ্ধে, সব-কিছু আমাদের প্রতিকূলে। আমাদের জীবন আমরা নষ্ট ক’রে চলেছি দিনের পর দিন শ্রমে নোঙরামীতে··· প্রবঞ্চনায়। আর ওর মজা লুঠছে, রাজভোগ ওড়াচ্ছে আমাদের শ্রমের সুবিধা নিয়ে। কুকুরের মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ ক’রে রেখেছে আমাদের অজ্ঞানের অন্ধকারে। আমরা কিছু জানি না, আতঙ্কে আমরা সবকিছুকেই ভয়ের চোখে দেখি। আমাদের জীবন এক অমাবস্যার অন্ধকারঘেরা রাত্রি—এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন। মনের বিষে আচ্ছন্ন ক’রে রেখে ওরা আমাদের রক্তপান করছে। ওরা অতিভোজনে ভুঁড়ি বাগাচ্ছে, বমি করছে,—ওরা লোভ-শয়তানের চেলা···তাই নয় কি?

 তাই-ই।

 মা দেখতে পেলেন, ভিড়ের পিছনে দু’জন পুলিস এবং সেই গোয়েন্দা। অমনি তাড়াতাড়ি কাগজগুলো ছড়াতে গেলেন, কিন্তু কার যেন একখানা অপরিচ্ছন্ন হাত এসে ব্যাগটা ছিনিয়ে নিয়ে পলকে অদৃশ্য ক’রে ফেললো—তারপর প্রশ্ন হ’ল, কাকে বলবো? কাকে খবর দেবো?

 মা তাতে কান না দিয়ে বলতে লাগলেন···এই জীবনযাত্রাপ্রণালীকে বদলাতে, সকল মানুষকে মুক্তি দিতে, আমার মতো তাদের জীবন্ত কবর হ’তে তুলে নবজীবন, দিতে এগিয়ে এসেছে কতিপয় যুবক···যারা তাদের

২০০