পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

কেবলই মনে হয়, দুনিয়ার বুকে অপূর্ব চিজ সে, কেউ তাকে মাপতে পারে না কেউ তার দাম তলিয়ে দেখে না, সবাই চায় তাকে হজম ক’রে ফেলতে। পরে সে বুঝতে পারে, অন্যান্য বহু মানুষের মধ্যে যে প্রাণ তাও তারই মতো···তখন থেকে তার মন নরম হ’তে থাকে, ব্যাধি উপশম হ’তে থাকে। লজ্জা জাগে, বোঝে যে, মন্দিরশীর্ষে উঠে একা নিজের ঘণ্টাটি বাজিয়ে লোককে আকৃষ্ট করার চেষ্টা বৃথা—মন্দিরের বড় ঘণ্টা তার ক্ষুদ্র ঘণ্টাধ্বনিকে ডুবিয়ে দিয়ে বেজে উঠে। বড় ঘণ্টার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জাগতে হ’লে চাই ছোট ছোট ঘণ্টাগুলির একত্র সম্মিলন। আমি কি বলতে চাচ্ছি, বুঝতে পাচ্ছ নিকোলাই?

 হাঁ, কিন্তু বিশ্বাস করি না।


 খাবার এলো। খেতে খেতে এণ্ড্রি নিকোলাইকে বোঝাতে লাগলো, কারখানায় কেমন ভাবে সোশিয়ালিস্ট মতবাদ প্রচারিত হয়েছে। নিকোলাই সব শুনলো, তার মুখ আবার গম্ভীর হয়ে উঠলো, বললো, বড্ডো ধীরে চলছে কাজ, বড্ডো ধীরে। আরও তাড়াতাড়ি হলে ভালো হয়।

 এণ্ড্রি বলে, মানুষের জীবনটা তো ঘোড়া নয়, নিকোলাই, যে, চাবুক ক’ষে তাকে ছুটিয়ে নিয়ে যাবে।

 নিকোলাই সেই একই সুরে বলতে লাগলো,···কিন্তু বড্ডো ধীরে, ধৈর্য থাকে না আমার। কি করি, কি করি! তার অঙ্গভঙ্গিতে গভীর নৈরাশ্য ফুটে ওঠে।

 এণ্ড্রি বলে, আমরা করব জ্ঞান লাভ এবং জ্ঞান বিস্তার।

 যুদ্ধ করব কবে? নিকোলাই সহসা প্রশ্ন করলো।

 এণ্ড্রি হেসে বলে, যুদ্ধ কখন করতে হবে তা জানি না, কিন্তু

৮৫