পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মিবার-গৌরব-কথা

সার্থকতা অনুভব করেন নাই। খিলিজি বংশীয় আলাউদ্দিন একজন প্রতাপশালী সমাট ছিলেন। তিনি যখন দিল্লীর সিংহাসনে আসীন তখন চিতোরের সিংহাসনে রাণা লক্ষ্মণ সিংহ প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। অতি তরুণ বয়সে লক্ষ্মণ সিংহ চিতোরের সিংহাসনে অধিরোহণ করেন। সুতরাং তদীয় পিতৃব্য ভীমসিংহ সমুদায় রাজকার্য পরিচালন করিতেন। ভীমসিংহ সিংহলদ্বীপবাসী চৌহান বংশীয় হামিরশঙ্কের কন্যা রূপসী-শ্রেষ্ঠ পদ্মিনীকে বিবাহ করিয়াছিলেন। পদ্মিনীর অসামান্য সৌন্দর্য্য যথার্থই তাঁহার নামের সার্থকতা প্রদান করিয়াছিল। পদ্মাসনা কমলাই পদ্মিনীর উপমা স্থল। বাস্তবিক পদ্মিনীর সমতুল্য অপরূপ রূপলাবণ্যবতী রমণী পৃথিবীতে অতি অল্পই জন্ম গ্রহণ করিয়াছেন। পদ্মিনীর রূপের খ্যাতি তখন ভারতের সর্ব্বত্রই বিদিত ছিল। অধিক দিন এ খ্যাতি দিল্লীশ্বর আলাউদ্দীনের অবিদিত রহিল না। ভারতের সর্ব্বোৎকৃষ্ট রত্নরাজি দিল্লীশ্বরের চরণে উৎসগীকৃত হইত। এই রমণী রত্ন, এই লোক ললামভূতা পদ্মিনী ধরাতলে মূর্ত্তিমতী এই দেবী-মূর্ত্তি ক্ষুদ্র নর ভীমসিংহের নয়ন পুত্তলি, এই চিন্তা দিল্লীশ্বরের হৃদয়ে বিষম ঈর্ষানল প্রজলিত করিল। তিনি এই দুর্লভ রমণীরত্ন অপহরণে কৃত সংকল্প হইলেন।