বিদ্যাধরী দল যথা, হায় রে ভূতলে
অতুলিত! বীণা, বাঁশী, মৃদঙ্গ, মন্দিরা-
আদি যন্ত্র বাজে মিলি মধুর নিক্কণে!
তার পাছে শূল-পাণি বীরাঙ্গনা[১]-মাঝে
প্রমীলা[২], তারার দলে শশিকলা যথা!
পরাক্রমে ভীমা বামা। খেলিছে চৌদিকে
রতন-সম্ভবা বিভা ক্ষণ-প্রভা-সম।
অন্তরীক্ষে সঙ্গে রঙ্গে চলে রতিপতি
ধরিয়া কুলুম-ধনুঃ, মুহুর্মুহু হানি
অব্যর্থ কুসুম-শরে! সিংহ-পৃষ্ঠে যথা
মহিষ-মর্দ্দিনী দুর্গা; ঐরাবতে শচী
ইন্দ্রাণী; খগেন্দ্রে রমা উপেন্দ্র[৩]-রমণী,
শোভে বীর্য্যবতী সতী বড়বার পিঠে—
বড়বা, বামী-ঈশ্বরী, মণ্ডিত রতনে!
ধীরে ধীরে, বৈরীদলে যেন অবহেলি,
চলি গেলা বামাকুল। কেহ টংকারিলা
শিঞ্জিনী; হুঙ্কারি কেহ উলঙ্গিলা অসি[৪];
আস্ফালিলা শূলে কেহ; হাসিলা কেহ বা
অট্টহাসে টিটকারি; কেহ বা নাদিলা,
গহন বিপিনে যথা নাদে কেশরিণী,
বীর-মদে, কাম-মদে উন্মাদ ভৈরবী!
লক্ষ্য করি রক্ষোবরে, কহিলা রাঘব;
“কি আশ্চর্য, নৈকষেয়? কভু নাহি দেখি,
পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৪০).pdf/১১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮১—৪০৩
মেঘনাদবধ কাব্য: তৃতীয় সর্গ
৯৩