পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৪০).pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬৭—৫৯২
মেঘনাদবধ কাব্য: তৃতীয় সর্গ
১০১

তাহার উপরে কৃষী জাগে সাবধানে,
খেদাইয়া মৃগযূথে, ভীষণ মহিষে,
আর তৃণজীবী জীবে[১] জাগে বীরব্যূহ,
রাক্ষস-কুলের ত্রাস, লঙ্কার চৌদিকে।
হৃষ্টমতি দুই জন চলিলা ফিরিয়া
যথায় শিবিরে বীর ধীর দাশরথি।
হাসিয়া কৈলাসে উমা কহিল| সম্ভাষি
বিজয়ারে, “লঙ্কা পানে দেখ লো চাহিয়া,
বিধুমুখি! বীর-বেশে পশিছে নগরে
প্রমীলা, সঙ্গিনী-দল সঙ্গে বরাঙ্গনা।
সুবর্ণ-কঞ্চুক-বিভা উঠিছে আকাশে!
সবিস্ময়ে দেখ ওই দাঁড়ায়ে নৃমণি
রাঘব, সৌমিত্রি, মিত্র বিভীষণ-আদি
বীর যত! হেন রূপ কার নর-লোকে?
সাজিনু এ বেশে আমি নাশিতে দানবে
সত্য-যুগে। ওই শোন ভয়ঙ্কর ধ্বনি!
শিঞ্জিনী আকর্ষি রোষে টঙ্কারিছে বাম!
হুঙ্কারে। বিকট ঠাট কাঁপিছে চৌদিকে!
দেখ লো নাচিছে চূড়া কবরী-বন্ধনে।
তুরঙ্গম-আস্কন্দিতে উঠিছে পড়িছে
গৌরাঙ্গী, হায় রে মরি, তরঙ্গ-হিল্লোলে
কনক-কমল যেন মানস-সরসে!”
উত্তরে বিজয়া সখী; “সত্য যা কহিলে,
হৈমবতি, হেন রূপ কার নর-লোকে?
জানি আমি বীর্য্যবর্তী দানব-নন্দিনী
প্রমীলা, তোমার দাসী; কিন্তু ভাব মনে,


  1. তৃণজীবী জীবে—যে জীব-সমূহ তৃণাহারে জীবন ধারণ করে