পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

কেবল ভারতবর্ষে নহে, প্রাচ্য ও প্রতীচ্য সমস্ত জগতের সভ্যপ্রদেশে বিস্তৃত হইয়াছিল।[১] সে দিন চলিয়া গিয়াছে; ইতিহাসে কেবল তার ক্ষীণ স্মৃতিটুকু রাখিয়া গিয়াছে।

 অতীত গৌরবের সঙ্গে সঙ্গে আর্য্যভারতের সেই তিনটি প্রাচীন জনপদের নামও এক্ষণে বিলুপ্ত বলিলেই চলে; তাহাদের সীমানির্দ্দেশও প্রত্নতত্ত্বের তিমিরাবরণের অন্তরালে পড়িয়া নানা জটিল সমস্যার বিষয়ীভূত হইয়াছে। প্রত্নতত্ত্ববিদ্গণ এই তিনটি জনপদের মোটামুটি যে সীমানির্দ্দেশ করিয়া থাকেন, তাহা হইতে জানা যায় যে, বর্ত্তমান রাজসাহী ও ভাগলপুর বিভাগের সন্নিহিত প্রদেশটিই প্রাচীন অঙ্গ-রাজ্যের অন্তর্গত ছিল; উত্তরে ভাগীরথী হইতে দক্ষিণে গোদাবরী নদী পর্য্যন্ত কলিঙ্গের সীমা বিস্তৃত ছিল এবং অঙ্গ ও কলিঙ্গের পূর্ব্ব প্রদেশটিই বঙ্গ নামে অভিহিত হইত। এই সীমানির্দ্দেশানুসারে প্রাচীনকালে বর্ত্তমান মেদিনীপুর জেলার সমস্ত ভূভাগ প্রাচীন কলিঙ্গ-রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। বিশ্বকোষ-সম্পাদক শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব লিখিয়াছেন, “এখনকার মেদিনীপুর, উড়িষ্যা, গঞ্জাম ও সরকার তৎকালে কলিঙ্গ-রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।”[২]

 উত্তরকালে আর্য্যভারতের এই প্রাচ্য বিভাগে অঙ্গ, বঙ্গ ও কলিঙ্গ ব্যতীত পুণ্ড্র ও সুহ্ম নামে আরও দুইটি নূতন রাজ্য সংস্থাপিতপুণ্ড্র ও সুহ্ম রাজ্য। হয়। সুপ্রাচীন সাহিত্যে এই পাঁচটি রাজ্যেরই নামোল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। হরিবংশে একটি আখ্যায়িকা আছে, দৈত্যরাজ বলির পত্নী সুদেষ্ণার গর্ভে


  1. বঙ্গীয় সাহিত্য-সম্মেলনের তৃতীয় অধিবেশনের সভাপতি স্বর্গীয় সারদাচরণ মিত্রের পঠিত অভিভাষণ।
  2. জন্মভূমি পত্রিকা-১ম খণ্ড-৪৪৮ পৃষ্ঠা।