টানিয়া অঙ্গের বাস যতনে শুয়ায়[১]।
মাথা হইতে ঘোমটা বিনোদ টানিয়া লামায়॥
কিবা মুখ কিবা সুখ ভুরুর ভঙ্গিমা।
আন্ধাইর[২] ঘরেতে যেমন জ্বলে কাঞ্চা সোনা॥
এইরূপ দেখিয়া বিনোদ হইল পাগল।
চান্দের সমান রূপ করে ঝলমল॥
শিরে না দীঘল কেশ পড়ে কন্যার পায়।
সেই কেশ লইয়া বিনোদ মেঘুরী[৩] খেলায়॥
“কি কর পরাণের বন্ধু শুন মোর কথা।
আজি রাতে মানা দেও খাও মোর মাথা॥
না ফুটিতে ফুল কেন তুল্যা লও কলি।
মধু না আসিতে ফুলে নাহি আসে অলি॥
খিধা লাগলে তাপ্তা[৪] ভাত জুড়াইয়া সে খায়।
এমন হইতে বন্ধু তোমায় না জুয়ায়॥
পঞ্চ ভাইয়ের বউ নিদ্রা নাহি গেছে।
বেড়ার ফাক দিয়া তারা তোমায় দেখিছে॥
ভূষণের রুণুঝুণু শব্দ শুনি কানে।
পরিহাস করবে তারা কালিকা বিহানে॥
পরদীম[৫] নিবাইয়া বন্ধু আজি কাট নিশি।
চিত্তে ক্ষেমা দিও বন্ধু না বানাইও দোষী॥”
নিবিয়া ঘরের বাতী অন্ধকার হইল।
শুভক্ষণ শুভ রাইত পোয়াইয়া গেল॥
পরভাতে উঠিয়া কন্যা বাসি জল দিয়া।
হাত পাও ধোয় বিনোদ পিড়িত ৰসিয়া॥১—৭৬
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১৩
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মলুয়া
৬৯