ভাইরে বইনে মিল্যা কান্দে গলা ধরাধরি।
“এমন দুঃখের কথা কেমনে পাশরি॥
পঞ্চ ভাইয়ের বইন আছলা[১] বড় আদরের।
ভাগ দেখ্যা দিলাম বিয়া কপালের ফের॥
পঞ্চ বউয়ের অঙ্গে নাহি ধরে সোনা।
তোমার অঙ্গ খানি দেখ্যা হইয়াছি ফানা॥
অঙ্গেতে মৈলান[২] বসন শত জোরা তালি।
ধুলামাটী লাগ্যা বইনের অঙ্গ হইছে কালি॥
খালি ভূমে পইরা[৩] বইন শুইয়া নিদ্রা যায়।
শীতল পাটী ঘরে দেখ তুল্যা রাখছে মায়॥
ঘুমাইতে না পার বইন মশার কামরে।
আবের পাঙ্খা ঝালুয়াইর[৪] ও মশইর টাঙ্গাইল[৫] তোমার ঘরে॥
ভাত ফালাইয়া ভাত খাও বাপের বাড়ী।
উবাস কইরাছ বইন শুন্যা দুঃখে মরি॥
অত খেজালত আর না টানায় প্রাণে।
সোয়ারী[৬] পাঠাইব বল কালুকা বিয়ানে।
ধানে চাউলে গোলা ভরা কত লোকে খায়।
আমার বইনের উবাস প্রাণে বরদাস্ত না পায়॥
বার বছর পালছে মার কোলেতে করিয়া।
কড়ার কাম না করছে বইন বাড়ীতে থাকিয়া॥
আলুফা[৭] জিনিস যত কেউ না খাইয়া।
ছোট বইনের লাগ্যা রাখছে ছিকায় তুলিয়া॥
এও কথা শুন্যা মাও হইছে পাগলিনী।
তিন দিন ধরা যায় না খায় অন্নপানি॥
বাপের বাড়ী না যাও যদি কাইল বিয়ানে তুমি।
উবাস থাকিয়া মায়ে ত্যজিব পরানি॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২৮
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
মৈমনসিংহ-গীতিকা