হুকুম করিল কাজী পেয়াদা পশ্চানে[১]।
“বিনোদেরে নইয়া যাও নিরলইক্ষার ময়দানে॥
জেতায়[২] রাখিয়া তারে কব্বরে মাটি দিও।
তার ঘরের নারীরে কাড়িয়া আনিও॥
জাজিরপুরে বাস করে দেওয়ান জাহাঙ্গির।
তাহার হাউলীতে[৩] নিয়া করিও হাজির॥
হুকুম পাইয়া যত পেয়াদা মির্দ্দাগণ।
বিনোদে ধরিয়া লয় নিরলইক্ষার চর॥
বিনোদের মায় কান্দে মাটিতে পড়িয়া।
“হায় হায় আমার যাদু গেলরে ছাড়িয়া॥
যমে যদি নিত পুত্রে না থাকিত আড়ি।
মাইন্ষের হাতে গেল প্রাণ কেমনে পাশরি[৪]॥
পিঞ্জরের পাখী মোর হৃদয়ের নলি।
একেবারে গেল মোর বুক কইর্যা খালি॥”
শিয়রে বইস্যা মলুয়া মায়েরে বুঝায়।
মলুয়ার চক্ষের জলে জমিন ভাইস্যা যায়॥
কান্দিয়া কাটিয়া মলুয়া কোন কাম করে।
পঞ্চ ভাইয়ে লেখে পত্র আড়াই অক্ষরে[৫]॥
বিনোদে ধরিয়া নিল কাজীর পেয়দায়।
কাজীর হুকুম কথা লিখে সমুদায়॥
পত্র লিখিয়া মলুয়া কোন কাম করে।
কোড়ার মুখে দিল পত্র অতি যতন করে॥
বহুকালের পালা কোড়া ইসারাতে জানে।
উইরা গেল সোণার কোড়া ভাইয়ের বির্দ্দমানে॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মৈমনসিংহ-গীতিকা