বাপ কোথায় মাও কোথায় কোথায় গুণের ভাই।
এই সংসারে অভাগিনীর নাহি দেখি ঠাই॥
কান্দিয়া কাটাই নিশি মোছি চক্ষের পানি।
এইখানে সাক্ষী করি এই রাজার রাণী॥
“একদিন শিরে তৈল মাখিয়া রাণীরে।
কলসী লইয়া যাটে যাই জল আনিবারে॥
ঢাক-ঢোল বাজে রঙ্গে লোকে সাজে পারে[১]।
আজিগো কিসের পূজা দেবের মন্দিরে॥
কালীপূজা হয় আজি কালীর মন্দিরে।
নরবলি হৈব আজি মায়ের দুয়ারে॥
কেবা নর কোথা হইতে আনিল ধরিয়া।
নরবলি হৈব শুনি স্থির নহে হিয়া॥
লোকে করে বলাবলি পথে কানাকানি।
বাপ-ভাই দিবে বলি এই কথা শুনি॥
“সকাল ভরিয়া জল ফিরিলাম ঘরে।
শীঘ্র করিয়া স্নান করাই রাণীরে॥
রাণী করে সাজা পারা[২] যাইব দেবের বাড়ী।
আপন মন্দিরে যাই হয়ে একেশ্বরী॥
আঞ্চল ধরিয়া মোছি নয়নের পানি।
উপায় না দেখি মোর আমি অভাগিনী॥
“হেন কালে সাক্ষী মোর আসিল মন্দিরে।
রাজপুত্র আসি মোরে জিজ্ঞাসা যে করে॥
‘বিয়া কর কন্যা মোরে রাখ মোর প্রাণ।’
আমি কহিলাম মোর পূর্ব্বের সন্ধান॥
‘আজি কেন রাজার পুরে আনন্দের রোল।
কিসের লাগিয়া এত বাজে ঢাক-ঢোল॥’
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কমলা
১৬৩