চৌদ্দ বাঁকের মাথায় গিয়া রাত্রি ভোর হইল।
সেই খানে গিয়া কানা তরী লাগাইল[১]॥
“রাণীর হুকুম বলি শুন চরনদার[২]।
রজনী হইলে তোর বিদায় আমার॥”
গাও-গেরাম নাই কাছে অনছতলছ[৩] পানি।
বনে ডাকে বাঘ-ভালুক জলে কুম্ভরিণী॥
সেই খানে দুই জনে বনবাস দিয়া।
দেশের ভায়[৪] চল্ল চইতা তরীখানি বাইয়া॥
“বাপের বাড়ীর পান্সীরে কোথায় চল্যা যাও।
মায়ের আগে খবর কইও আমার মাথা খাও॥
মায়ের আগে খবর কইয়ো দুখিনী ঝিএরে।
মাঝিমাল্লা দিয়া গেল এই না বনান্তরে॥
বাপের আগে কইও খবর অন্য কেহ নাই।
বনেতে পড়িয়া কেম্নে জীবন গোঁয়াই॥
চলিতে চলিতে পান্সী আর দেখা নাই।
বনের হরিণী যেমন বনেতে বেড়াই॥
শুন শুন পবন আরে যাও মায়ের আগে।
রূপবতী কন্যা তার খাইছে[৫] জংলার বাঘে॥”
“না কাইন্দ না কাইন্দ কন্যা কান্দিলে কি হয়।
বিধাতা লিখ্যাছে বল কোন্ জনে খণ্ডায়॥
শিরে কইলে[৬] সর্পাঘাত ওঝার কিবা করে।
কর্ম্মদোষে আমরা দুইজন আইলাম বনান্তরে॥
দেবের নৈবেদ্য করে কুক্কুরে ভোজন।
তার লাগিয়া কন্যা তুমি করিছ ক্রন্দন॥