“কি কলঙ্ক কৈল মোর কহন না যায়।
কঙ্কেরে মারিয়া পরে মারিব লীলায়॥
তারপর প্রবেশিয়া জলন্ত আগুনে।
প্রায়শ্চিত্ত করব নিজে শরীর দহনে॥”
লজ্জা আর ক্রোধে গর্গ পাগল হইয়া।
এখানে সেখানে যায় ঘুরিয়া ফিরিয়া॥
ক্রোধস্বরে গর্গ লীলায় ডাক দিয়া বলে
ভয়েতে লীলার চক্ষু ভরি গেল জলে॥
“শুন কন্যা লীলাবতী আমার বচন।
ঝাটহ জলের ঘাটে করহ গমন॥
শীঘ্রগতি আন জল কলসী ভরিয়া।
দেবের মন্দির গেল অপবিত্র হইয়া॥
কুস্বপন দেখিয়াছি কাল নিশাভাগে।
দেবতা চলিয়া যান তেই সে বিরাগে॥
জল লইয়া তুমি আইস তাড়াতাড়ি।
স্বহস্তে মন্দির আমি পরিষ্কার করি॥
অপবিত্র ঘরখানি পবিত্র করিব।
জনমের তরে শেষ পূজায় বসিব॥”
সুশীলা সরলা লীলা কিছু না বুঝিল।
কোন কথা ভয়েতে না জিজ্ঞাসা করিল॥
বাপের আদেশে লীলা নদীর ঘাটে যায়।
মনেতে ভাবিয়া কিছু খুঁজে নাহি পায়॥
দৈবেতে ঘটাইল কিবা অঘট ঘটন।
আজি কেন পিতা গর্গ হইল এমন॥
গাগরী তুলিয়া কাঁকে লীলা যায় জলে।
পথ নাহি দেখে লীলা নয়নের জলে॥
এমন হৈল পিতা কিসের কারণ।
কোন দিন দেখি নাই বিরসবদন॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কঙ্ক ও লীলা
২৮১
38—1918 B.T,