সোনার ঝাড়ি ভইরা রাখে আচমনের পানি।
তাম্বুলে সাজায় কন্যা সোনার বাটাখানি॥
কেওয়া খয়ার দিল কন্যা গন্ধের লাগিয়া।
রন্ধনশালা ঘরে রইল রান্ধিয়া বাড়িয়া॥
আর একদিন পরীক্ষা আরম্ভ হইল। লক্ষ্মীকুজাগরের রাত্র, মন্ত্রীর কথামত রাজা রাণী ও দাসীকে আল্পনা আঁক্তে কইল। সাবধান কইরা কইল যে আমার বন্ধু আজ আস্ব[১]; আলেপনা যে যত সুন্দর কইরা পার আঁইক্য[২]। নকল রাণী আঁকিল—কাউয়ার ঠেং[৩], বগার পারা[৪], হরুর টাইল্[৫], ধানের ছড়া।
কাজলরেখা আঁকিল—
উত্তম সাইলের চাউল জলেতে ভিজাইয়া।
ধুইয়া[৬] মুছিয়া কন্যা লইল বাটিয়া॥
পিটালি করিয়া কন্যা পর্থমে আঁকিল।
বাপ আর মায়ের চরণ মনে গাঁথা ছিল॥
জোরা টাইল আঁকে কন্যা আর ধানছড়া।
মাঝে মাঝে আঁকে কন্যা গিরলক্ষ্মীর পারা[৭]॥
শিব-দুর্গা আঁকে কন্যা কৈলাস ভবন।
পদ্মপত্রে আঁকে কন্যা লক্ষ্মী-নারায়ণ॥
হংসরথে আঁকে কন্যা জয়া-বিষহরী।
ডরাই ডাকুনী[৮] আঁকে কন্যা সিদ্ধ বিদ্যাধরী॥
- ↑ আস্ব=আসিবে।
- ↑ আঁইক্য=আঁকিয়ো।
- ↑ কাউয়ার ঠেং=কাকের ঠ্যাং (পূর্ব্ববঙ্গে স্থানভেদে ‘কাক’কে কাউয়া, কাইয়া, কাওয়া বলা হয়)।
- ↑ বগার পারা=বকের পায়ের দাগ (অত্যন্ত বিশ্রী বলিয়া উহার সহিত তুলনা করা হইয়াছে)।
- ↑ হরুর টাইল্=হরু [সরু=সরিষা (টাইল) রাখিবার পাত্রবিশেষ]।
- ↑ ধুইয়া=ধৌত করিয়া।
- ↑ গিরলক্ষ্মীর পারা=গির (গৃহ); পারা (পদচিহ্ন)=গৃহলক্ষ্মীর পদচিহ্ন।
- ↑ ডরাই ডাকুনী=এক প্রকারের প্রেতিনীবিশেষ।