প্রাণের দোসর ছিল মোর ছোট ভাই।
নিশার স্বপনে তার মুখ দেখ্তে পাই॥
কপালে আছিল দুঃখু বাপে দিল বনে।
মির্ত[১] কুমারের দেখা পাইলাম বনে॥
সাত দিন সাত রাইত বাইছা[২] তুল্লাম শাল।
এই দুঃখ কপালে ছিল হইব এমন হাল[৩]॥
হাতের কঙ্কণ দিয়া কিনিলাম দাসী।
সে হইল রাণী আর আমি বনবাসী॥
সত্যযুগের পক্ষী তুমি কও সত্যবাণী।
কোন্ দিন পোয়াইব মোর দুঃখের রজনী॥”
পক্ষীর উত্তর। গান—
“কাইন্দ না কাইন্দ না কন্যারে না কান্দিয়ো আর।
নিশি রাইতে কইবাম কন্যা তোমার সমাচার॥”
নিশি রাইতে পুনঃ কন্যা শুকে ডাইক্যা কয়।
“জাগ জাগ শুকপংখী রাত্রি যে ভোর হয়॥
বাপের বাড়ী দাসদাসী লেখাজুখা নাই।
কর্ম্মদোষে দাসী হইয়া জীবন কাটাই॥
বাপের বাড়ীত খাট পালঙ্ক আছে শীতল পাটি।
কর্ম্মদোষে আমার পংখী শয়ান ভুঁই মাটি॥
বাপেতে কিনিয়া দিত অগ্নিপাটের শাড়ী।
সেই অঙ্গে পইরা থাকি জোলার পাছাড়ী[৪]॥
হাতের কঙ্কণ দিয়া কিনিলাম দাসী।
যে হইল রাণী আর আমি বনবাসী॥
সত্যযুগের পক্ষী তুমি কও সত্যবাণী।
কোন্ দিন পোয়াইব মোর দুঃখের রজনী॥”
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৪
মৈমনসিংহ-গীতিকা
* * * *