আমার বাচ্ছার এরা অইব[১] দুষ্মন্।
সেই না কারণে সদা অইব কেবল দন[২]॥
এমন বালাই আমি উম দেই বইয়া।
দুগ্ধ দিয়া অজাগর রাখ্তাম[৩] পালিয়া॥
দুঃখুরে ডাকিয়া আমি না আনিবাম ঘরে।
বালাই দূর কর্বাম আমি মারিয়া এরারে[৪]॥
কইতরা গেছে অখন আধারের লাগিয়া।
আধার আনিলে খাইবাম দুইজনে মিলিয়া॥
উইড়া দুষ্মন্ আইছে আরে পইড়া কর্ত।[৫]
আমার মুখের গরাস কাড়িয়া লইত॥
এমন বালাইয়ের গলা ঠোঁটে না ছিড়িয়া।
দুষ্মনের কাঁটা দেই দূর করিয়া॥”
এই না বলিয়া কইতরী কোন্ কাম করে।
গলাতে ধরিয়া ঠোঁটে আছড়াইয়া মারে॥
মারিয়া দুই বাচ্ছা পরে আরে জঙ্গলায় ফালায়।
আধার লইয়া কইতরা আরে বাসার পানে যায়॥
কইতরায় দেখ্যা কইতরী আরে জুড়িল কান্দন।
কইতরা জিগায়[৬] “কান্দ কিসের কারণ॥”
কইতরী কহে “শুন আরে খসম আমার।
আধার আনিতে গেলা আরে দিয়া বাচ্ছার ভার॥
এমন সময়ে এক গিরধনী[৭] আসিয়া।
আমার বুক অইতে নিল জোরে সে কাড়িয়া॥
গিরধনীর মুখে বাচ্ছারা হারাইল পরাণি।
সেই না কারণে আমি কান্দি আভাগিনী॥”
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪১৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫৪
মৈমনসিংহ-গীতিকা