“দুখের ছাওয়ালে কেমনে বাঁচাই পরাণে।
অনাধারে[১] মরে কেমনে দেখিব নয়ানে॥
মা মা বল্যা যখন আরে আলাল দুলাল কান্দে।
বুকেতে আমার হয়রে ছেল যেমন বিন্ধে॥
কি দিয়া বুঝাইয়া রাখি ছেউড়া পুত্রেরে।
কেবা খাওন দেয় আরে পড়িলাম ফেরে[২]॥
মর্যাত না গেছ আওরাত গিয়াছ মারিয়া।
তিনলা পরানি মার্যা গেছ পলাইয়া॥[৩]
কি দুষ্মনি কইরাছিলাম আর জনমে আমি।
তার পর্তিশোধ লইলা এই না জর্ম্মে[৪] তুমি॥
বান্যাচঙ্গের দেওয়ান আমি নাহি মোর সমান।
অনুন্যাই[৫] ধন-দৌলত গোলাভর। ধান॥
পন্থের ফকীর অইল আরে আমার থাক্যা সুখী।
দুনিয়াতে নাই আর আমার মতন দুখী॥
কি করিব ধন-দৌলতে আর কি ছার দেওয়ানি।
দিলের দুঃখেতে যদি চক্ষে ঝরে পানি॥
কেবা খাইব[৬] আমার যে এই ধন-দৌলত।
শূন্য অইল ঘর মোর মরিয়া আওরাত॥
বুকে ছেল দিয়া গেল। তুমি কোন্ পরাণে।
দুনিয়া যে দেখি আমি আন্ধাইর নয়ানে॥
তুমি যে আছিলা আন্ধাইর ঘরের বাতি।
তুমি যে আছিলা আমার হৃদ্-পিঞ্জরার পংখী॥
তোমারে ছাড়িয়া আমি বাঁচি কোন্ পরাণে।
তেজিতাম[৭] পরাণি আমি তোমার কারণে॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫৬
মৈমনসিংহ-গীতিকা