সতাই না বুঝে সতীন্-পুতের বেদন।
সতিন-পুতে দেখে সতাই কাঁটার সমান॥
সেই কাঁটা তুল্যা সতাই দূরেতে ফালায়।
এরে দেখ্যা মন নাই সে সাদি কর্তে চায়॥
কলিজার লৌ মোর আলাল দুলাল।
দুঃখের উপর দুঃখু দিয়া না বাড়াই জঞ্জাল॥
আলাল দুলালে বিবি আমায় সপ্যা দিয়া।
সাদি না করিতে গেল মানা যে করিয়া॥
বিয়া নাই সে কর্বাম আমি সংসারের লাগিয়া।
কিসের সংসার আলাল দুলালে মারিয়া॥
তারারতারার=তাদের। মুখ দেখ্যা আমি আরে বাঁচিয়া পরাণে।
রাক্ষসের হাতে নাই সে দিবাম জীবমানে[১]॥”
এই কথা শুনিয়া উজীর কয় মিয়ার কাছে।
“কান্দিয়া কাটিয়া সাহেব ফয়দা[২] নাই যে আছে।
সতাই সকল সাহেব আরে না হয় সমান।
সতিন্-পুতের লাগ্যা কেউ দেয় জান্ পরাণ॥
আলাল দুলালে যতন করিবাম সকলে।
দুঃখ নাই সে পাইব কিছু সতাই বাদী অইলে॥
দিলের দুঃখু দূর কইরা কর্খাইন[৩] এক বিয়া।
সোনার সংসার পাল্খাইন[৪] যতন করিয়া॥”
এই কথা শুনিয়া মিয়া চিন্তে মনে মনে।
কিছু ফয়দা নাই মোর সংসার ছাড়নে[৫]॥
সোনার কলি আলাল দুলাল রহিলে বাঁচিয়া।
সংসার না থাকলে তারা খাইব কি করিয়া॥
সংসার নষ্ট অইলে পরে অইব তারার দুখ।
চিরদিন দুঃখে হায় ফাটিব যে বুক॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫৮
মৈমনসিংহ-গীতিকা