(১৬)
প্রেমের জয়
পাষাণে বান্ধিয়া হিয়া বসিল শিওরে।
নিদ্রা যায় নদীয়ার ঠাকুর হিজল গাছের তলে॥
আশমানের চান্দ যেমন জমিনে পড়িয়া।
নিদ্রা যায় নদীয়ার চান্ অচৈতন্য হইয়া॥
একবার দুইবার তিনবার করি।
উঠাইল নামাইল কন্যা বিষলক্ষের[১] ছুরি॥
“উঠ উঠ নদ্যাঠাকুর কত নিদ্রা যাও।
অভাগী মহুয়া ডাকে আখি মেইল্যা চাও॥
পাষাণ বাপে দিল ছুরি তোমায় মারিতে।
কিরূপে বধিব তোমায় নাহি লয় চিতে॥
পাষাণ আমার মাও বাপ পাষাণ আমার হিয়া।
কেমনে ঘরে যাইবাম ফিইরা তোমারে মারিয়া॥
জ্বালিয়া ঘীয়ের বাতি ফু দিয়া নিবাই।[২]
তুমি বন্ধুরে আমার আর লইক্ষ্য নাই॥
তুমারে[৩] মারিয়া আমি কেমনে যাইবাম ঘরে।
পাষাণ হইয়া মাও বাপে বধিল আমারে॥
কাজ নাই ভিন্ দেশী বন্ধুরে দুঃখ নাইসে করি।
আমার বুকে মারবাম আমি এই বিষলক্ষের ছুরি॥”
কি কর কি কর কন্যা কি কর বসিয়া।
কাঞ্চা ঘুমে জাগে ঠাকুর স্বপন দেখিয়া॥
শিওরে বসিয়া দেখে কান্দিছে সুন্দরী।
হাতে তুইল্যা নইছে কন্যা বিষলক্ষের ছুরি॥